ময়মনসিংহ প্রতিনিধি।। সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় দুজনের পরিচয়। এরপরে প্রেম ও বিয়ে। প্রায় আট মাস সংসারের পর স্ত্রীর জমানো টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে দেশে পালিয়ে আসে স্বামী। এই সংবাদ পেয়ে সপ্তাহ পর স্ত্রী স্বামীর গ্রামের বাড়িতে এসে অবস্থান নেন।
রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ময়মনসিংহের নান্দাইলের জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের সুরাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় সেখানেই নির্যাতনের শিকার হন স্ত্রী। এ অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
থানায় লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর উপজেলার মাইজবাড়ি গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের মেয়ে মোসা. নুরজাহান বেগম গত প্রায় ১৩ বছর আগে সৌদি আরবে যায় কাজের সন্ধানে। সেখানে একটি মাদরাসায় ও একটি দোকানে কাজ নেন। এর মধ্যে পরিচয় ঘটে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার দক্ষিণ জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের মো. জজ মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়ার (২৫) সাথে। পরিচয়ের একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠলে ২০২০ সালের ৪ মে বিয়ে হয়।
ভুক্তভোগী নারী জানান, সংসার চলা অবস্থায় দেশের বাড়িতে ঘর করার কথা বলে বেশ কয়েক বার স্বামী সোহাগ মিয়া তার কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা নেয়। সোহাগ তাকে জানায়, কয়েক বছর চাকরি করার পর তারা দুজনে আর সৌদি আরবে থাকবে না। দেশে এসে পড়বে। স্বামীর কথামতোই সব কিছু চলতে থাকে। এ অবস্থায় গত ১৭ জানুয়ারি দুজনের কর্মস্থলে চলে গেলে রাতে এসে দেখতে পান স্বামী সোহাগ মিয়া বাসায় আসেনি। পরদিন অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যে সোহাগের এক মামা ’সৌদি-প্রবাসী’ সবুজ মিয়ার মাধ্যমে জানতে পারেন সোহাগ দেশে চলে গেছে। পরে বাসায় খোঁজ করে দেখতে পান তাঁর ড্রয়ারে থাকা নগদ আড়াই লাখ টাকা ও সোকেসে থাকা বিভিন্ন গহনা (যার পরিমাণ প্রায় ১০ ভরি) খোয়া যায়।
এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর তিনি দেশে এসে সরাসরি স্বামীর গ্রামের বাড়িতে এসে দেখা পেলেও স্ত্রী হিসেবে তাকে অস্বীকার করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। এরপর থেকে গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি স্বামীর অপেক্ষায় থাকলেও রোববার স্বামীর বাবা ও পরিবারের অন্যরা তাকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করার চেষ্টার পর ব্যাপক মারধর করে। খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে নান্দাইল থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, ঘটনার শুরু হয় সৌদি আরবে। তারপরও স্বামীর বাড়িতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় ওই নারীর কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ নেওয়া হয়েছে।