রাকিব হোসেন, সৌদি আরব থেকে::প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সৌদি আরব সফরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বুধবার (১ নভেম্বর) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
সৌদি আরবে নারী সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী ৫ নভেম্বর ঢাকা ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী। সৌদি আরব ও অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের যৌথ আয়োজনে আগামী ৬ থেকে ৮ নভেম্বর জেদ্দায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী পবিত্র ওমরাহ পালন করবেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামী রোববার (৫ নভেম্বর) আমাদের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে সৌদি আরবে যাবেন। ৭ নভেম্বর তিনি ঢাকায় ফিরতে পারেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৫ নভেম্বর আমাদের কমার্সিয়াল ফ্লাইট আছে, সেটিতে গিয়ে এই সুযোগে তিনি ওমরাহ করবেন। ৫ তারিখে বাংলাদেশ থেকে মদিনায় একটা ফ্লাইট আছে। খরচ কমানোর জন প্রধানমন্ত্রী কমার্সিয়াল ফ্লাইটে যান। ৬ তারিখে তিনি সম্মেলনে যোগ দেবেন। আমার বিশ্বাস সেদিন গভীর রাতে তিনি মক্কায় পৌঁছে উমরাহ করবেন।
তিনি বলেন, সৌদি আরবে নারী সম্মেলনে যোগ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনেকের বৈঠক হবে। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওআইসি মহাসচিব, ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট, সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ চার-পাঁচটি বৈঠক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ড. মোমেন আরও বলেন, সৌদির সম্মেলনে গাজা প্রসঙ্গটি উঠতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। গাজায় যে মানবতা দলিত হচ্ছে, এ বিষয়ে আমরা সোচ্চার অবস্থা নিয়েছি। দুনিয়ায় যারা বড় বড় দেশ আমাদের মানবাধিকার প্রসঙ্গে কথা বলেন, আমাদের দেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন, তারা অনেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় বাধা দেন না। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, গাজায় শুধু মানবাধিকার নয়, সব ধরনের আইন-কানুন লঙ্ঘন হচ্ছে। প্রায় সাড়ে আট হাজার মানুষ এরই মধ্যে মারা গেছে। যারা বিভিন্ন ভবনের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছে তাদের খবর তো আমরা জানিই না। অর্ধেকের বেশি বাড়িঘর ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীতে এরকম ভয়াবহ মানবাধিকার পরিপন্থি কাজ আগে কখনো দেখিনি।
বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে ড. আব্দুল মোমেন বলেন, পুলিশ, সাংবাদিকরা তো পলিটিক্যাল না, এই নন-পলিটিক্যাল লোকজনকে অত্যাচারের বিরুদ্ধে আপনারা (গণমাধ্যম) সোচ্চার হন না কেন? আপনারা সাংবাদিকরা তো আমার দলের বা অন্য কোনো দলের না। তাহলে সাংবাদিকদের ওপর অত্যাচার কেন? ২৫ জন সাংবাদিককে অত্যাচার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতৃত্বের লজ্জা পাওয়া উচিত। যারা এটি (সহিংসতা) করেছে বিএনপির উচিত তাদের বহিষ্কার করা। বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশে কোনোদিন শুনিনি বিচারপতিদের বাসভবনে হামলা হয়, কোনো দেশে শুনিনি হাসপাতালে ভাঙচুর করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশ আমাদের নিরাপত্তা দেয়। আমেরিকায় পুলিশকে খুব সম্মান করা হয়। সব দেশ পুলিশকে সম্মান করে। আর এদেশে পুলিশের ওপর অত্যাচার, এটি গ্রহণযোগ্য নয়। আমি হাসপাতালে গিয়েছিলাম, পাঁচজন (পুলিশ সদস্য) মুমূর্ষু অবস্থায় আছে। কী রকম নৃশংস অত্যাচার তাদের ওপর হয়েছে। এর বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান প্রয়োজন।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন অবশ্যই হবে, আমাদের সংবিধান অনুযায়ী হবে। আমাদের শাসনতান্ত্রিক নিয়মে নির্বাচন অবশ্যই হবে।