রাশেদুল ইসলাম রাশেদ ।। রংপুরে প্রতিবন্ধী রিকশাচালক নাজমুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে রংপুর মহানগর ব্যাটারি চালিত চার্জার রিকশা ভ্যান জাতীয় মটর শ্রমিক পার্টি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা জাতীয় মটর শ্রমিক পার্টি।
এদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আধাবেলা নগরীতে সব ধরণের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, চার্জার রিকশা ও রিকশাভ্যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যাটারি চালিত চার্জার রিকশা ভ্যান জাতীয় মটর শ্রমিক পার্টির রংপুর মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বাবু ও রংপুর মহানগর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা জাতীয় মটর শ্রমিক পার্টির সভাপতি হামিদুল ইসলাম। কর্মসূচি সফল করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য যে, বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে কনস্টেবল হাসানের কোর্টপাড়া ভাড়া বাসা থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হাসান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ওইদিনই স্ত্রীসহ কনস্টেবল হাসান আলীকে আটক করে পুলিশ। পরে রাতে নাজমুলের স্ত্রী শ্যামলী বেগম বাদী হয়ে পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলী ও তার স্ত্রী সাথী বেগমকে আসামি করে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামিদের আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত শুনানি শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রোববার এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
এছাড়াও বৃহস্পতিবারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। এতে পুলিশ ও এলাকাবাসীর মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতারুজ্জামান প্রধান বলেন, রিকশাচালক নাজমুলের ঝুলন্ত মরদেহ ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে মারধর ও আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে যদি হত্যার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নথিভুক্ত করা হবে।
মৃতের স্ত্রী শ্যামলী বেগম ও স্থানীয়দের অভিযোগ, রংপুর পুলিশ সেন্টারে কর্মরত কনস্টেবল হাসান আলী ও তার স্ত্রী সাথী বেগম পিটিয়ে রিকশাচালক নাজমুলকে হত্যা করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, লালমনিরহাটের মুস্তফি এলাকার শারীরিক প্রতিবন্ধী হাসান আলী আশরতপুর ইদগাপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। তার পায়ে সমস্যা থাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা ভাড়ায় চালাতেন। ওই রিকশাটি ছিল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত কনস্টেবল হাসান আলীর। হাসান আলীর বাড়ি গাইবান্ধায়। তিনি আশরতপুর কোটপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে পরিবারসহ বসবাস করেন।
গত মঙ্গলবার রাতে ওই রিকশা নিয়ে হাসান আলীর সঙ্গে নাজমুলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জেরে তাকে বেধড়ক মারধর করেন হাসান আলী। একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে কোটপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান হাসান। বুধবার দুপুরে ওই বাড়ি থেকে নাজমুলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।