রাশেদুল ইসলাম রাশেদ।। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) মহান বিজয় দিবসে পতাকা বিকৃতিকারী ১৯ শিক্ষক কর্মকর্তা দেশ ও জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর কর্তৃক পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৭৫তম বিশেষ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অপ্রত্যাশিত ওই ঘটনার জন্য ওই শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দকে পত্র দিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক করা হয়েছিলো এবং দেশ ও জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যেকে ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য মহোদয়ের কাছে লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন।
বক্তব্য প্রদানকারী শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দ হলেন- বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. আর এম হাফিজুর রহমান, অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ মোরশেদ হোসেন, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. পরিমল চন্দ্র বর্মণ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক এবং ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ নুর আলম সিদ্দিক, পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ শাহজামান, পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ রশীদুল ইসলাম, বেরোবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব তাবিউর রহমান প্রধান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ কামরুজ্জামান, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী প্রক্টর জনাব মোঃ ছদরুল ইসলাম সরকার, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর প্রদীপ কুমার সরকার, পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব চালর্স ডারউইন, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর মাসুদ-উল-হাসান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাম প্রসাদ বর্মণ, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এবং শহীদ মুখতার ইলাহী হলের সহকারী প্রভোস্ট শামীম হোসেন, রসায়ন বিভাগের প্রভাষক মোস্তফা কাইয়ুম শারাফাত, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আবু সায়েদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক রহমতুল্লাহ্, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক সোহাগ আলী এবং পরিসংখ্যান বিভাগের সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) শুভঙ্কর চন্দ্র সরকার।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক চত্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকায় সবুজের ভিতরে লাল বৃত্তের পরিবর্তে চতুর্কোনা করে বিকৃত করা হয়। এছাড়াও পায়ের নিচে লাগিয়ে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। পরে ১৭ ডিসেম্বর এমন অভিযোগে সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহসহ ৬ শিক্ষকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান।
জাতীয় পতাকা বিকৃতি ও অবমাননার অভিযোগে ৯ শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম আরিফ।
এছাড়াও ২৮ ডিসেম্বর তাজহাট আমলি আদালতে ১০ শিক্ষক ও ৩ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে নালিশী দরখাস্ত করেন রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফ। যা পরে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। একটি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত এই ১৯ শিক্ষক কর্মকর্তার জামিন মঞ্জুর করেন।