সমির উদ্দিন ভূঞা, ফেনী- আজকের দিনটি ছিলো ভয়ানক, এক বিভৎস বিভিষীকাময়। তখন ফেনী সদর হাসপাতালে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম তখন সকাল সাড়ে ১১টা। হঠাৎই মোবাইলে কল আসলো। রিসিভ করলাম। শুনলাম। মনে তেমন কিছুই হয়নি। যখন নিজ চোখে দেখলাম ভয় পেলাম। শক্ত করলাম মনকে। ইমারজেন্সিতে নেয়ার পর দেখাটা আরো ভয়নক, কষ্টের যন্ত্রনা। ধৈর্য ধরে সহ্য করলাম। নিজ চোখে যখন সিলাই করার দৃশ্য দেখলাম তখন তার আত্ম চিৎকারে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। ভয়ে শুধু আকুতি মিনতি করছে। বার বার বাবাকে ডাকছে, আংকেল আংকেল বলে ডাক্তারকে সম্বোধন করছে। সার্জারী রুম মহুর্তে ফাঁকা হয়ে গেল।
বলছিলাম আমার কলিজার ধন মুনতাসিরের কথা। বেড়াতে গিয়েছিলো নানার বাড়ী। আনন্দে কাটছিলো বেড়ানোর দিনগুলো। বেড়ানো প্রায় শেষ। বাসায় ফেরার কথা। অধীর আগ্রহে অপেক্ষাও করছি কখন ছেলেটা আসবে। আমার মনটা যেন ছটফট করছে। ইদানিং রাতে ঘুমের ঘোরে কিছুটা ভয়ও লাগে আমার। তবুও ভয়কে করছি জয়। ছেলেটার আজকের দৃশ্যটা চোখে ভাসলে কান্নায় জল ভেসে যায়। দীর্ঘশ্বাস ফেলছি বারে বারে। মনে হচ্ছে বিপদ পিছু ছাটছে না। কলিজাটার ভাস্যমতে নানার বাড়ীর রাজহাঁসকে ভয়পেয়ে সাইড় দিয়ে ঘরে যাওয়ার সময় পুকুর পাড়ের ওয়ালে ছিটকে পড়ে যায়। পুকুর সেচ দেয়া। পুকুরের পাড় পাকা করা হয়েছে । ওয়ালের কার্নিশ ধরে নিজেকে নীচে পড়া থেকে বাঁচাতে গিয়ে মুখের বামপাশের নীচ ঠোঁটের ভিতর বাহির ছিঁড়ে ফাঁক হয়ে গেছে। একই পাশে উপরের দাঁতের মাডির উপর মাংশ বিশেষ থেতলে গেছে। সার্জারী করতে হয়েছে ঠোঁটকে। সিলাই দিয়েছে অন্তত ৬/৭টি। ব্যাথার যন্ত্রনায় চিৎকার কাতুর হয়ে শুয়ে আছে। এ যেন বড় পরিক্ষা।ও আল্লাহ ও মাবুদগো আমার কলিজাকে তুমি সুস্থ করে দাও। তুমি তাকে হেফাজত করো। সবার কাছে দোয়া চাই, আল্লাহ সুবাহনহা তায়লা যেন মুনতাসিরকে দ্রুত সুস্থ করে দেন।