গাজীপুর প্রতিনিধি:: গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম কলেজে প্রতিদ্বন্দ্বীকে তুলে নিয়ে পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী এক ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটানার পর দিন আবার ফেসবুকে ওই ভুক্তভোগীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্ট দেন তিনি। অপহরণ এবং মারধরের অভিযোগ এনে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর রবিবার রাতের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
অপহরণের শিকার মো. ফেরদৌস (২৭) বদরে আলম কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। তাঁকে তুলে নেওয়া কলেজ ছাত্রলীগের কর্মীর নাম রবিন সরদার একই কলেজের স্নাতক শেষ বছরের শিক্ষার্থী। ফেরদৌস ও রবিনের মধ্যে একসময় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল বলে জানা যায়। এক সময় তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। ছাত্রলীগের পদ পাওয়ার জন্য তাদের মধ্যে শত্রুতার সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, রবিাবর কলেজে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার সময় গাড়িতে করে ফেরদৌসকে তুলে নিয়ে যায় রবিন। এ নিয়ে বিকেলে কলেজে বিক্ষোভ করে তার পরিবারের সদস্য ও বন্ধুরা। পরে তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানান ফেরদৌসের মা। পুলিশ রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জয়দেবপুর শিববাড়ী মোড় এলাকা থেকে ফেরদৌসকে উদ্ধার করে। এখন তিনি গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসক জানিয়েছেন, ফেরদৌসের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বাঁ পায়ের একটি রগের আংশিক কেটে গেছে। তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে।
আহত ফেরদৌস জানান, ‘ভাওয়াল কলেজে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হওয়ায় রবিন সদর আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধরে নিয়ে যায়। চাকু দিয়ে আমার পায়ের দুটি রগ কেটে দিয়েছে। আমার মোবাইল ও ফেসবুক সবকিছুর পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয়। এরপর তার ইচ্ছামত আমার ফেসবুকে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে পোস্ট দেয়।’
পরে সোমবার দুপুরে রবিন সরদার তার ফেসবুক পোস্ট দিয়ে আমাকে জন্মদিনের শুভচ্ছা জানিয়েছে। রবিন সরদার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করায় আমি তার কাছ থেকে সরে এসেছিলাম। যার কারণে সে আমাকে ধরে নিয়ে মারধর করেছে।’
ঘটনার বিষয়ে রবিন সরদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদা সিকদার বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে থেকে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র ফেরদৌসকে ধরে নিয়ে যায়। বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পর রাতেই পুলিশ গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় করা মামলায় একজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফেরদৌসের মা নাজমা বেগমের করা মামলায় ২২ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।