রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, গাইবান্ধা: ‘পলাশের সঙ্গে আমার এক বছরের প্রেম। সে একাধিকবার আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। এখন সে বিয়ে করতে চাচ্ছে না। সে আমাকে ফোন করে বাড়িতে ডেকেছে। আমি আসার পর পলাশের মা-বাবা আমার চুলের মুঠি ধরে ঘর থেকে বের করে দেন। তখন থেকেই বাড়ির সামনেই বসে আছি। পলাশ আর তার বাড়ির লোকজন সবাই লাপাত্তা। সে যদি আমাকে বিয়ে না করে তাহলে আত্মহত্যা করবো। পলাশ আমার জীবন তছনছ করে দিলো'
সোমবার (২ অক্টোবর) কথাগুলো এভাবেই কান্না জড়িত কণ্ঠে বলছিলেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসা ১৪ বছর বয়সী এক স্কুল ছাত্রী।
উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের উত্তর মরুয়াদহ (মাঝিপাড়া) গ্রামে বিমল চন্দ্র বর্মণের বাড়ির সামনে গত রবিবার বিকেল থেকে অনশনে বসে ওই কিশোরী। পলাশ চন্দ্র ওই এলাকার বিমল চন্দ্রের ছেলে।
জানা যায়, স্কুলছাত্রীর সঙ্গে এক বছর ধরে পলাশ চন্দ্র বর্মণের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। পলাশ ওই মেয়ের সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন। সম্প্রতি বিষয়টি উভয়ের পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হয়। এরপর থেকেই পলাশকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল মেয়েটি। কিন্তু তাতে পলাশ ও তার পরিবার রাজি হয়নি।
এ নিয়ে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। স্থানীয়রা কয়েকদফা বসেও বিষয়টি সমাধান করতে পারেননি। এ অবস্থায় ওই স্কুলছাত্রী বাধ্য হয়ে বিয়ের দাবিতে পলাশ চন্দ্রের বাড়িতে অনশনে বসেন।
অনশনে বসা স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আমার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে পলাশ। বিষয়টি চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও মীমাংসা করতে পারছে না। সবাই ৫ লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চায়। থানায় অভিযোগ দিয়েও কাজ হয়নি। আমি সবার কাছে অনুরোধ করছি, যে ছেলে আমার মেয়ের ইজ্জত নষ্ট করছে ওই ছেলেকে দিয়েই মেয়ের বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে।
ছাপড়হাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কনক কুমার গোস্বামী বলেন, মেয়েটি তার প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেছে। ছেলের পরিবারের লোকজন গা ঢাকা দিয়েছে। মেয়েটির নিরাপত্তার কথা ভেবে নারী গ্রামপুলিশসহ দুজনকে পাহারায় রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেদিন তাদের সম্পর্কের কথা জেনেছি সেদিন থেকেই বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা রাখি দ্রুত বিষয়টি সমাধান হবে।
এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিলন চ্যাটার্জি বলেন, বিয়ের দাবিতে স্কুলছাত্রীর অনশনের বিষয়টি কেউ জানায়নি। তবে কয়েকদিন আগে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে।