জাবেদ হোসেন ও রিপন আকন্দ:: গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিয়োগ প্রক্রিয়া, প্রকল্প বাস্তবায়ন, এবং অর্থ আত্মসাতসহ একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি স্থানীয় সাংবাদিক মোঃ ফেরদাউছ মিয়া এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ ডাকযোগ জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেছেন।
অভিযোগে বিস্তারিতভাবে বিভিন্ন অনিয়মের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়পলাশবাড়ী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৬টি মহল্লাদার এবং ২টি দফাদার পদের নিয়োগে এই অনিয়ম ঘটে। এবং মহদীপুর ইউনিয়নের মহল্লাদার পদের ক্ষেত্রে প্রার্থীর উচ্চতা যথাযথ না হওয়া সত্ত্বেও পরীক্ষায় অযৌক্তিক সময় বাড়িয়ে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
হরিনাথপুর ইউনিয়নের ক্ষেত্রে একইভাবে বাছাই পর্বে অযোগ্য প্রার্থীকে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়, যেখানে যোগ্য প্রার্থী সংখ্যালঘু রবিদাস সম্প্রদায়ের কুমার নারায়ণ বঞ্চিত হন।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয় মহদীপুর ইউনিয়নের দফাদার পদের নিয়োগে একক প্রার্থী হিসেবে আদালতে বিচারাধীন হত্যা মামলার আসামিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর কর এবং হাটবাজার উন্নয়ন সহায়তা প্রকল্পে ভুয়া বিল দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ। উপজেলা রাজস্ব খাত ও অন্যান্য প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ এবং ভুয়া ভাউচার দাখিল। স্টেশনারি, গাড়ির তেল, আসবাবপত্র ক্রয় ও বিভিন্ন দিবস উদযাপনের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব অনিয়মে পলাশবাড়ী উপজেলার উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাঁরা এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
মোঃ ফেরদাউছ মিয়া বলেন, এখন পর্যন্ত এই অভিযোগের বিষয়ে প্রশাসনের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতি যথাযথ তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে পলাশবাড়ী উপজেলার প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসানের বলেন, আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা প্রশাসনিক নিয়ম-কানুন যথাযথভাবে মেনে চলেছি। কেউ অসন্তুষ্ট হয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে থাকলে সেটা তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে। আমি সবসময় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পক্ষে কাজ করেছি এবং কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই আর যে অভিযোগের কথা বলছেন এটা এখনো আমি অবগত হইনি।