মনজু হোসেন, স্টাফ রিপোর্টারঃ পঞ্চগড়ে মৃত্যুর পর নিজ শয়ন ঘরের আসবাবপত্র সরিয়ে মেঝেতে আব্দুল মালেক ফকির ভান্ডারী (৯৬) নামে এক বৃদ্ধকে দাফন করেছে পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৪নং কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের কুচিয়া মোড় গ্রামের ফকির মার্কেট এর পাশে তার নিজ বাড়িতে দাফন করে পরিবারের সদস্যরা। মৃত আব্দুল মালেক ফকির ভান্ডারী মৃত আহমেদ আলী শাহ্’র ছেলে। গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ থাকায় সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন বলে জানান পরিবারের সদস্যরা ।
মৃত আব্দুল মালেক ফকির ভান্ডারীর ছেলে আব্দুস সামাদ এবং সলেমান আলী বলেন, আমার বাবা চট্রগ্রাম ফটিকছড়ির পীর মাওলানা মুজিবুল বশরের ভক্ত ছিলেন। বাবার ওসিয়ত ছিলো তার মৃত্যুর পর তাকে যেন আমরা নিজ বাড়িতে ঘরের মেঝেতে দাফন করি। তাই বাবার কথা রাখতে সকল নিয়ম মেনে বাবাকে দাফন করেছি। জানাযা ও দাফনের সময় স্থানীয়রাও উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, আব্দুল মালেক ফকির ভান্ডারী চট্রগ্রাম ফটিকছড়ির পীর মাওলানা মুজিবুল বশরের ভক্ত ছিলেন। তিনি পীরের তরিকা পালন করায় তার ইচ্ছাতেই মৃত্যুর পর যানাজা সম্পন্ন করে এবং সুন্নত মোতাবেক ঘরে দাফন করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলছে ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর বিষয়টি প্রতিবেশীদের কাছে গোপন রেখেই দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
এ সময় মৃতের জামাই হাফেজ মো. সাইদুর ইসলাম বলেন, আমার শ্বশুড় কাদিরিয়া তরিকার একজন পীর ছিলেন। উনার ওশিয়ত ছিল মারা যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে তিনি তাদের সন্তানদের বলেছেন বাড়িতে ঘরের দাফন করার জন্য। তিনি আরো বলেন, উনার ওশিয়ত মোতাবেক কবর খোড়া হয় এবং গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে সকলে মিলে দাফন করে। শরীয়ত মোতাবেক বাড়ির উঠানে যানাজা সম্পন্ন করে এবং সুন্নত মোতাবেক তাকে আমরা দাফন করেছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় গলেহা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মো. সানাউল্লাহ বলেন, শরীয়ত সম্মত অনুযায়ী আমরা হাদিস ও কুরান পড়ে যতটুকু পাই, মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করতে তার এলান (মাইকে অবগত) হবে। জানাযার খেত্রে অন্মুক্ত সবাই জানবে। কিন্তু তারা তড়িত গতিতে মৃত্যুর পর গ্রামবাসিকে এলানে না জানিয়ে আব্দুল মালেক ফকির ভান্ডারীকে নিজ বাড়িতে ঘরের ভেতরেই দাফন করেছে। আসলে এটা শরীয়ত সম্মত না।
এদিকে স্থানীয়রা বলেন, মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকালে আমরা বাজারে আসলে তাদের সব কিছু স্বাভাবিক দেখতে পাই। আব্দুল মালেক ফকির ভান্ডারী ছেলে ও পরিবারের সদস্যরা অন্যান্য দিনের মত তাদের কার্যক্রম করে। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে একজনের মাধ্যমে জানতে পারি আব্দুল মালেক ফকির ভান্ডারী মারা গেছে। তখন দুজন মিলে আমরা তার বাড়িতে গেলে কবর দেখতে পাই। জানতে পেরেছি পরিবারের লোকজন তাকে নিজ শয়ন ঘরে দাফন করেছে।