তাহমিনা আক্তার, ঢাকা ব্যুরো।। ক্রিকেটার নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে রাকিবের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিবাহ নিবন্ধন ডিজিটাল করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে মানবাধিকার-বিষয়ক সংগঠন এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ দাবি জানানো হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম, আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট কাওসার হোসেন, ঢাকা জেলা শাখার আহ্বায়ক হাদিউজ্জামান পলক প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটাল না হওয়ার কারণে বিয়ে সংক্রান্ত তথ্য গোপনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে কম-বেশি সবাই এর দ্বারা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। তাই বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন পদ্ধতি ডিজিটালাইজেশন করা হলে এই প্রতারণার হার অনেকাংশেই কমে আসবে। তখন যে কেউ সহজেই অনলাইনে দ্রুত বিবাহ ও তালাক নিবন্ধনের তথ্য পেয়ে যাবে।
নাসির ও তার স্ত্রী তামিমার বিয়ের প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, এই বিয়েটি নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ক্রিকেটার নাসিরের বিরুদ্ধে রাকিবের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় বক্তারা ক্রিকেটার নাসির ও তার স্ত্রী তামিমার বিয়ের ঘটনার বেশ কিছু অসঙ্গতি তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, গেল ১৪ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেছেন ক্রিকেটার নাসির হোসেন। বিয়েকে স্মরণীয় করতে ভালোবাসা দিবসটিকেই বেছে নেন তিনি। কিন্তু বিয়ের সপ্তাহ পার না হতেই চরম বিতর্ক শুরু হয়েছে।
শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) নাসিরের স্ত্রীকে নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য বেরিয়ে আসে। সকাল থেকে সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তামিমার আরেক স্বামী ও সন্তানের ছবি। রাকিব নামে ওই স্বামীর সঙ্গে তার বিয়ে হয় ১১ বছর আগে। সেই ঘরে কন্যা সন্তানের বয়স এখন নয় বছর।
নাসিরের সঙ্গে বিয়ের ভিডিও ও খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় এ জিডিটি করেন বলে নিশ্চিত করেন উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও (ওসি) শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস।
জিডিতে রাকিব উল্লেখ করেন, তামিমার সঙ্গে এখনো তার ডিভোর্স হয়নি। ডিভোর্স ছাড়া স্ত্রী কিভাবে অন্যের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন সেই প্রশ্ন তার। এজন্য স্ত্রীর বিরুদ্ধে জিডি করেছেন তিনি।
পরে জিডির কপি ও তাদের বিয়ের কাবিননামাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। জিডিতে রাকিব অভিযোগ করেছেন, তার সঙ্গে সংসার করা অবস্থায় তামিমা গোপনে আরেকজনকে বিয়ে করেন। সেখানে ছয়মাস সংসারও করেন।
জিডি সূত্রে আরও জানা যায়, তামিমা ছয় মাস যে ছেলের সঙ্গে সংসার করেছেন ওই ছেলের নাম অলক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি অডিও ক্লিপে এই ছেলের বিষয়েই নাসির ও রাকিবের মধ্যে কথোপকথনও শোনা যায়।
শনিবার রাকিব তামিমা ও তার সম্পর্কের নানা বিষয়ে কথা বলেছেন গণমাধ্যমের সঙ্গে। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, তামিমাকে তিনি দুবার বিয়ে করেছেন। অর্থাৎ তামিমার জীবনে তিন স্বামী (নাসির হোসেন, অলোক ও রাকিব) এলেও বিয়ে করেছেন চারবার।
রাকিব বলেন, 'প্রেম করে বিয়ে করেছিলাম। সে আসলে আমাকে চাপ দিয়েই বিয়ে করেছিল। প্রথমে আমরা টাঙ্গাইলে কোর্ট ম্যারেজ করেছিলাম। পরে আমরা বিয়ে করি বরিশালে। আমার বউকেই দুবার বিয়ে করেছি। এরপর সংসার শুরু করি।’
এদিকে রাকিব ও নাসিরের ফোন রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে রাকিবকে ফোন করে জিডি করার ব্যাপারটি ধামাচাপা দিতে বলেন নাসির।
কথোপথনে রাকিবের প্রশ্ন ছিল, আপনি কি তামিমা সম্পর্ক সব কিছু জানেন? উত্তরে নাসির হোসেন বলেন, তার সব কিছু জেনেশুনেই আমি তাকে বিয়ে করেছি। তার বাচ্চা আছে, তার আগেও বয়ফ্রেন্ড ছিল সবকিছুই আমি জানি। আপনার বৌ আপনার সাথে ভালো থাকলে নিশ্চয়ই আপনার ১১ বছরের সংসার ভেঙে আমার কাছে চলে আসতো না।
রাকিব হাসান ও তামিমার কাবিননামায় দেখা যায় ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তিন লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে হয়। রাকিবের দাবি, গেল ১১ বছরে তার স্ত্রীর পড়াশোনা থেকে শুরু করে জব সবক্ষেত্রেই তিনি সাহায্য করেছেন।