ঢাকারবিবার , ১৫ অক্টোবর ২০২৩
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নামাজের সময় ইউএনওকে সরে দাঁড়াতে বলায় চাকরি গেল ইমামের!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
অক্টোবর ১৫, ২০২৩ ১২:১৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার:: নামাজের কাতারে সরে বসতে বলাটাই কাল হয়েছে। ক্ষিপ্ত হন ইউএনও। আর সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে মুয়াজ্জিন তো বটেই, ইমামকেও হারাতে হয়েছে চাকরি। তাদের দুজনকে তাৎক্ষণিক চাকরিচ্যুত করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।

এমন অভিযোগ করেছেন মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল বাশার। অবশ্য কাতারে সরে বসতে বলার কারণে চাকরিচ্যুতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউএনও মো. ফোরকান এলাহি অনুপম।

শুক্রবার কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পেরুল ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন ভাটরা কাছারি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন সকাল থেকে ইউএনও মসজিদ সংলগ্ন সরকারি পুকুরে বড়শি দিয়ে মাছ ধরছিলেন।

মাওলানা আবুল বাশার বলেন, ‘খুতবা পড়ার শেষ পর্যায়ে ইমামের বরাবর প্রথম সারিতে শার্ট-প্যান্ট পরা এক ভদ্রলোক এসে বসেন। ইকামত শেষে নামাজে দাঁড়ানোর সময় মুয়াজ্জিন ওই ভদ্রলোককে একটু সরতে বলেন। এরপর আমি নামাজ পড়াই।

‘নামাজ শেষে আমি মসজিদ থেকে বের হলে ওই ভদ্রলোক আমাকে ও মুয়াজ্জিনকে মসজিদের দক্ষিণে সরকারি পুকুরপাড়ে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে উপস্থিত একজন আমাকে প্রশ্ন করেন, আপনি ওনাকে চিনেন? আমি বললাম, না। তখন তিনি বললেন- ওনি আমাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার। আমি তাৎক্ষণিক বললাম- স্যার, আমরা আপনাকে চিনতে পারিনি।

‘তখন ইউএনও স্যার উত্তেজিত হয়ে বললেন- কোনো কথা নেই। তোকে এখন পানিতে চুবামো। তুই কত বড় মাওলানা হয়েছিস, তোর ইন্টারভিউ নিব।’

ইমাম আবুল বাশার বলেন, ‘তখন তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল্লাহ ও মেম্বার গোলাপ হোসেনকে মোবাইল ফোনে কল করে দ্রুত পুকুরপাড়ে আসতে বলেন। এরপর তিনি বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে ধরতে আমাকে কোরআন-হাদিস ও ইসলামের ঐতিহাসিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। বেশিরভাগ প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পেরেছি। কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর পূর্ব প্রস্তুতি না থাকায় দিতে পারিনি।

‘চেয়ারম্যান-মেম্বার পুকুরপাড়ে আসার পর ইউএনও স্যার আমাকে প্রশ্ন করেন- আমাকে সরতে বললেন কেন? কোন কিতাবে আছে মুয়াজ্জিনকে ইমামের বরাবর দাঁড়াতে হবে? তখন স্যারকে বললাম, ইমাম যদি কোনো কারণে নামাজ পড়াতে ব্যর্থ হয় সেক্ষেত্রে ইমামের বরাবর যিনি থাকেন তাকে ইমামের দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাছাড়া আমরা আপনাকে চিনতে পারিনি।

‘তখন তিনি বলেন, আপনি নাকি অংহকারী? আমি বললাম স্যার, আমরা অহংকার করে আপনাকে সরতে বলিনি। তখন স্যার ক্ষুব্ধ হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আমাকে পানিতে চুবাবেন বলেন।’

মাওলানা আবুল বাশার বলেন, ‘একপর্যায়ে তিনি চেয়ারম্যান-মেম্বারকে বলেন, আমি যখন বলব তখন ইমাম, মুয়াজ্জিন ও কমিটির লোকদের আমার অফিসে নিয়ে আসবেন। উত্তরে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন- এমনি গেলে যাবে, না গেলে ধরে নিয়ে আসব।’

তিনি বলেন, ‘প্রায় ২ ঘণ্টা জেরার পর আমি বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে পুকুরপাড় থেকে পাকা সড়কের দিকে গেলে মসজিদের মুসল্লি ও স্থানীয় ভাটরা গ্রামের জহিরুল ইসলাম নামের একজন আমাকে বলেন- হুজুর, আপনি ভালো মানুষ। আপনাকে আমরা অনেক সম্মান করি। ইউএনও স্যার এবং চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে পাঠাইছে। কাল থেকে আপনি আর মসজিদে আসবেন না। আসলে অপমানিত হবেন।’

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি শুক্রবার অন্য মসজিদে নামাজ পড়েছি। আমাদের মসজিদে উপস্থিত ছিলাম না। কিন্তু বিকেলে শুনেছি জুমার নামাজের পরে ইমামের সাথে নির্বাহী অফিসারের সমস্যা হয়েছে।’

স্থানীয় পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল্লাহর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি একটি জরুরি মিটিংয়ে আছি, মিটিং শেষে আপনার সাথে কথা বলব।’

এক ঘণ্টা পর পুনরায় কল করলে তিনি একই কথা বলেন।

ইউএনও মো. ফোরকান এলাহি অনুপম বলেন, ‘নিয়মিত মনিটরিংয়ের অংশ হিসেবে আমি ওই মসজিদে নামাজ পড়তে যাই। খুতবায় ইমাম সাহেবের কিছু কথা উস্কানিমূলক মনে হয়। আমি বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করি। এরপর আজ (শনিবার) বিকেলে জানতে পারি, ইমাম সাহেবকে মসজিদে যেতে চেয়ারম্যান বারণ করেছেন।

‘শুক্রবার জুমার নামাজের পর চেয়ারম্যান আমাকে জানান যে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য ওই ইমাম জেল খেটেছেন। আমি বিষয়টি মসজিদ কমিটিকে সাথে নিয়ে তদন্ত করতে বলি। তদন্তে ইমাম সাহেব দোষী প্রমাণিত হতে পারেন, আবার না-ও পারেন। তদন্ত চলাকালে ওনাকে চাকরিচ্যুত করা ঠিক হয়নি।’

কাতারে দাঁড়ানো নিয়ে ইউএনও বলেন, ‘এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এটা কারা ছড়াচ্ছে সেটা বুঝতে পারছি না

আপনার মন্তব্য লিখুন