বরগুনা প্রতিনিধি:: বরগুনায় প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগে এক নারীকে দোষী সাব্যস্ত করে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
ধর্ষণ মামলার বাদির এই রায়ের কথা শুনে বৃহস্পতিবার (২৭ শে জুলাই) এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, গতকাল বুধবার দুপুরে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ মশিউর রহমান খান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- বরগুনা সদর উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের শশাতলা গ্রামের জামাল মল্লিকের স্ত্রী রুমা আক্তার (৩০)। বিষয়টি বুধবার সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেছে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আশ্রাফুল আলম। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রুমা আক্তার ২০১৭ সালের ১০ মার্চ ওই ট্রাইব্যুনালে একই গ্রামের মৃত নুরু সরদারের ছেলে প্রতিবেশী আকরামের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করেন যে, তার (রুমা) স্বামী প্রায়ই বাড়িতে থাকেন না। ওই সুযোগে প্রতিবেশী যুবক আকরাম তাকে উত্যক্ত করে। ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৭টার দিকে স্বামীকে নিয়ে রুমা একই গ্রামের লুৎফার বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি এলে স্বামীর সামনেই আকরাম রুমাকে জাপটে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় রুমার স্বামী জামাল মল্লিক বাধা দেয় এবং তাকে (আকরাম) পিটিয়ে আহত করে।
এ ঘটনায় আদালতে মামলা হলে ট্রাইব্যুনাল মামলাটি বরগুনা থানায় এজাহারের নির্দেশ দেন। বরগুনা থানা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩১ মে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, আকরাম নির্দোষ এবং বাদি রুমা আকতার মিথ্যা মামলা করেছেন। বাদি রুমা আকতার ওই ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে না রাজি আবেদন করলে তাও ট্রাইব্যুনাল নাকচ করে দেয়।
এ বিষয়ে আসামি আকরাম মিয়া বলেন, আমার মান সম্মান রুমা আক্তার শেষ করে দিয়েছে। আমি রুমা আক্তারের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল ওই ট্রাইব্যুনালে মামলা করি। রুমা আমার চেয়ে বয়সে বড়। তার স্বামীর সঙ্গে আমার জমাজমি নিয়ে বিরোধ থাকার কারণে আমার বিরুদ্ধে রুমা জঘন্য ও মিথ্যা মামলা করেছে। আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি।
রাষ্ট্রপক্ষের সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর আশ্রাফুল আলম বলেন, আকরাম ন্যায় বিচার পেয়েছেন। এই ম্যাসেসটি জনগণের কাছে পৌঁছালে এভাবে কেউ আর মিথ্যা মামলা করবে না।