রকিবুল ইসলাম রুবেল, বিশেষ প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাট নর্থবেঙ্গল বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষক না হয়েও পরিচালক/প্রধান শিক্ষক (অবৈতনিক) পরিচয়ে সুভাষ চন্দ্র বর্মনের চলছে জমজমাট নিয়োগ বাণিজ্য। তিনি ২০২২ সালে কাগজপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন পদে ৩৪ জনকে ২০১২ ও ২০১৮ সালের নিয়োগ দেখিয়ে পূর্বের নিয়োগকৃত ৫ জন সহ মোট ৩৯ জনের কাছ থেকে ইতোমধ্যে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। নিজের প্রধান শিক্ষক (অবৈতনিক) পদের বৈধতা না পেয়ে বর্তমানে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। এমপিওভূক্তি সহ নানা অজুহাতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে নতুনভাবে মেতে উঠেছেন টাকা উত্তোলনের মহোৎসবে।
জানা যায়, গত প্রায় ২০ দিন আগে সুভাষ চন্দ্র বর্মন ৩৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর সাথে যোগাযোগ করে এমপিওভুক্তির জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর সুপারিশ নেয়ার অযুহাতে মোটা অংকের টাকা উত্তোলন করেন সুভাষ চন্দ্র বর্মন। কিছুদিন ঢাকায় অবস্থান করে লালমনিরহাটে ফিরে এসে তিনি এসব শিক্ষক-কর্মচারীগণের মাঝে কথা ছড়িয়ে দেন যে, এমপিওভুক্তির জন্য সরকারের এ আমলে এটাই শেষ সুযোগ। মন্ত্রী মহোদয়ের সুপারিশ নেয়া হয়েছে। তোমাদের এমপিওভুক্তি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এধরণের প্রচারণা চালিয়ে আবারও ৩৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা উত্তোলন করে সুভাষ চন্দ্র বর্মন এখন ঢাকায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী জানান, সুভাষ চন্দ্র বর্মনের চাওয়া পূরণ করতে করতে আমরা প্রায় সর্বশান্ত হয়ে গেছি। তিনি বার বার একটি কথাই বলে আসছেন যে, তোমাদের নিয়োগ দিয়েছি যেভাবে হোক তোমাদের এমপিওভুক্ত করাবোই। মন্ত্রী মহোদয় নাকি আমাদেরকে এমপিওভুক্ত করতে রাজী হয়েছেন, এটাই নাকি আপাততঃ এমপিওভুক্তির শেষ সুযোগ, এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে মর্মে কথা বলে কয়েকদিন আগেও আমাদের কাছে জনপ্রতি ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা হারে উত্তোলন করে তিনি ঢাকা চলে গেছেন। জানিনা কপালে কি আছে!
এ ব্যাপারে সুভাষ চন্দ্র বর্মনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য যে, নর্থবেঙ্গল বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের পরিচালক/প্রধান শিক্ষক (অবৈতনিক) পরিচয়ে অবৈধভাবে বিদ্যালয় পরিচালনাকারী সুভাষ চন্দ্র বর্মনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, জালিয়াতি, স্বেচ্ছাচারিতা, মানসিক নির্যাতন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতারণা সহ মোটা অংকের অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে গত ০২/০৩/২০২৩ তারিখে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন মর্মে জানা গেছে।