প্রতিদিনের বাংলাদেশ।। ৩ লাখ টাকায় ভাড়া করা গুন্ডা দিয়ে নিজের ছেলেকে কুপিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে লেকের পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছে এক পাষণ্ড বাবা।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বেঙ্গালুরুতে। এ ঘটনায় আভানাহলি থানার পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।
৫০ বছর বয়সী ওই নিষ্ঠুর ব্যক্তি একজন ব্যবসায়ী। তিনি পুলিশকে জানান, সম্পত্তি নিয়ে বড় ছেলের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হত তার। ছেলে প্রায় দিন সম্পত্তির অর্ধভাগ লিখে দেওয়ার জন্য বাবা-মা’র ওপর নির্যাতন চালাত। এমনকি গায়ে পর্যন্ত হাত তুলত। ব্যক্তির স্ত্রী এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাই ওই পরিস্থিতিতে বড় ছেলের মতন মানুষকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার চরম সিদ্ধান্ত নেয় ব্যক্তি।
পুলিশ জানায়, মল্লেশ্বরমের বাসিন্দা বিভি কেশব নামক ওই অভিযুক্ত গত ১২ জানুয়ারি নিজের পিঠ বাঁচাতে থানায় গিয়ে বড় ছেলে কৌশল প্রসাদের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ লেখায়। সে ভেবেছিল, হয়তো পুলিশ ব্যাপারটিকে ধরতে পারবে না। গত ১০ জানুয়ারি থেকে কৌশল বাড়ি ফেরেনি সে ব্যক্তি জানিয়েছিল। পুলিশ যখন ঘটনার তদন্ত শুরু করে তখন অভিযুক্ত জানায় কৌশলের মোবাইল ফোন সে বাড়িতেই রেখে গিয়েছে। কৌশলের ভাইয়ের কাছে ফোন রয়েছে।
অন্যদিকে আভানাহলির স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে জানায়, এলিমলাপ্পা লেকের কাছে একটি ব্যাগ পাওয়া গিয়েছে, সেখান থেকে দুর্গন্ধ ভেসে আসছে। পুলিশ গিয়ে ব্যাগটিকে খুলে হতবাক হয়ে যায়। দেখে ব্যাগের ভিতরে একজন মানুষের দেহ টুকরো টুকরো করে কাটা। ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হলে পরে শনাক্ত হয় ওই দেহটা কৌশলের। শেষকৃত্যের জন্য পুলিশ কৌশলের দেহ তার পরিবারের হাতে তুলে দেয়।
কারা কৌশলকে খুন করেছে এবং কেন করেছে, এই ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশ আরও সন্ধান চালায়।
মল্লেশ্বরমের কাছে একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কৌশল একটি সাদা মারুতি গাড়িতে উঠেছিল। তারপর গাড়ির মালিকের খোঁজ করা হয়। গাড়ির মালিকের নাম নতুন কুমার। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে সে স্বীকার করে অপরাধ।
পুলিশকে সে জানায়, কৌশলের বাবা তাকে এবং তার এক বন্ধুকে ৩ লাখ টাকা দিয়ে ভাড়া করেছিল। ইতিমধ্যে ১ লাখ টাকা তারা অগ্রিম পেয়েছে।
অভিযুক্তরা জানিয়েছে, কৌশলকে তারা ওই লেকের কাছে নিয়ে গিয়েছিল, মদ্যপান করিয়ে তাকে বেহুশ করিয়ে দেয়। তারপর ভারি জিনিষ দিয়ে মাথায় আঘাত করে। হাত-পা কেটে ব্যাগের ভিতর পুরে লেকের পানিতে ভাসিয়ে দেয়। তারপরে কৌশলের বাবাকে গ্রেফতার করে এবং অভিযুক্তদের হেফাজতে রাখা হয়েছে।