প্রতিদিনের বাংলাদেশ:: চলচ্চিত্রের মানুষ হলেও অভিনয়ের বাইরের বিভিন্ন ইস্যুতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচিত এক নাম জায়েদ খান। প্রায় সময়ই বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন জায়েদ খান। তবে এবার ‘জাতিসংঘের পুরস্কার’ পাওয়ার খবর নিয়ে হঠাৎ আলোচনায় তিনি। যদিও খবরটি ভুয়া বলে জানিয়েছে সমসাময়িক আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করা পোর্টাল ব্লিটজ।
শুক্রবার (২১ জুলাই) হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার মধ্যমণি হয়ে ওঠেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। খবর পাওয়া যায়, তিনি আমেরিকায় জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠান ‘ইনস্টিটিউট অব পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি রিসার্চ’ থেকে একটি পুরস্কার পেয়েছেন। খবরে বলা হয়, জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকেই এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। দেশের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম ছাড়াও নানা অখ্যাত পোর্টালেও খবরটি বেশ ফলাও করে ছাপা হয়।
তবে আলোচিত এই বিষয়টি নিয়ে যাচাই-বাছাই শুরু করে পোর্টাল ব্লিটজ। বিষয়টি জানতে জাতিসংঘ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করে এই মাধ্যমটি।
জায়েদ খানের ‘জাতিসংঘের পুরস্কার’ পাওয়ার এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে ব্লিটজ জানায়, জায়েদ খানকে পুরস্কার দেওয়া ‘ইনস্টিটিউট অব পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি রিসার্চ’ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে জাতিসংঘের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মূলত নিজেদের উদ্যোগে জাতিসংঘের একটি হলরুম ভাড়া করে বিভিন্নজনকে পুরস্কৃত করে এই প্রতিষ্ঠানটি। ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এই সংগঠনটির নামে একটি ডোমেইন পরে ওয়েবসাইট চালু করা হয়। কিছু পেশাদার ব্যক্তির উদ্যোগে এ সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়। যাত্রা শুরুর পর থেকেই এখন পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক মানুষকে ‘আজীবন সম্মাননা’ পুরস্কার দিয়েছেন আয়োজকরা। পুরস্কারের তালিকায় অনেক নামিদামি ব্যক্তিও রয়েছেন। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নাম রয়েছে এই তালিকায়। তবে এই পুরস্কারের বিষয়ে হোয়াইট হাউস থেকেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
তবে আলোচিত এই বিষয়টি নিয়ে নিউইয়র্ক থেকে জায়েদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, করোনাকালে আমার কর্মকাণ্ড ও মানবিক তৎপরতা তাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মেইল চেয়েছে, আমি পাঠিয়েছি। আমার চলচ্চিত্রের কাজ সম্পর্কেও জানতে চেয়েছে। এ ছাড়াও আমি একজন চিত্রতারকা, তাই তারা আমাকে মনোনীত করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাকে যে সম্মাননা দেওয়া হলো তাতে আমি আবেগআপ্লুত। আমার এই অর্জন আমার দেশের জন্য।
ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যমতে, নিউইয়র্কে একটি অফিস ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির সুইজারল্যান্ড এবং লুক্সেমবার্গেও অফিস রয়েছে। যদিও সুইজারল্যান্ড ও লুক্সেমবার্গের অফিসের কোনো সুনির্দিষ্ট ঠিকানা প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখ করতে পারেনি।
বিষয়টির অনুসন্ধান করতে গেলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র ব্লিটজকে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের নামসর্বস্ব অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মূলত আফ্রো-আমেরিকানরা এগুলো পরিচালনা করে থাকেন। এমনকি অর্থের বিনিময়ে সম্মাননা দিয়ে তারা আয় করেন। আর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতেই তারা জো বাইডেনের মতো বড় বড় ব্যক্তিদের নামও পুরস্কারের তালিকায় যুক্ত করেন।
২০২২ সালে ওয়েবসাইট চালু হলেও প্রতিষ্ঠানটি দাবি করে ২০১৭ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কার্লোস ম্যানুয়েল প্যারেজ গঞ্জালেস নামে এক ব্যক্তি এই প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট এবং ড. অ্যান্ড্রিজ বেস নামে আরেকজন এটির প্রতিষ্ঠাতা। আন্তর্জাতিক পরিচালক হিসেবে নাম উল্লেখ আছে ফ্রেডেরিক অর্ডিন্স নামে একজনের।