ঢাকাসোমবার , ৯ মে ২০২২
  1. অপরাধ ও আদালত
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইসলাম ডেস্ক
  5. কৃষি ও অর্থনীতি
  6. খেলাধুলা
  7. জাতীয়
  8. তথ্য-প্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. নির্বাচন
  11. বানিজ্য
  12. বিনোদন
  13. ভিডিও গ্যালারী
  14. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
  15. রাজনীতি

জমি নিয়ে বিরোধ, স্কুলছাত্রের জন্মনিবন্ধনে সই করছেন না চেয়ারম্যান

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
মে ৯, ২০২২ ৮:০৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ইউপি চেয়ারম্যান স্কুলছাত্রের জন্মনিবন্ধন সংশোধনী ফরমে সই করছেন না। চার মাস ধরে ওই ছাত্রের বাবাকে তিনি হয়রানি করছেন। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করে ভুক্তভোগী পরিবার।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শান্তুনু চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে শুনানি করলেও ইউপি চেয়ারম্যান নিজের খামখেয়ালিতে অটল রয়েছেন।

সোমবার (৯ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ইউএনও নিজেই প্রতিবেদকের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাখাওয়াত হোসেন জসিম চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান চেয়ারম্যান। তিনি ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, জুলফিকার আলী চৌধুরী ও সাবিনা ইয়াছমিন দম্পতির ছেলে নুর আলী চৌধুরী ওহি ২০০৭ সালের ৯ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করে। চরবাদাম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চরসীতা গ্রামের বড় বাড়ি তার স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ করে ২০০৮ সালের ২৬ জুন জন্মনিবন্ধন ইস্যু করা হয়। ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর এর সনদ দেওয়া হয়। এতে দেখা যায়, ওহির পুরো নামের স্থানে শুধু ‘অহি’ লেখা হয়েছে। এ ছাড়া জন্মনিবন্ধন ইংরেজিতেও লেখা হয়নি। ওহি চরসীতা তোরাবআলী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি অনলাইনে জন্মনিবন্ধনটি সংশোধন করে সই করার জন্য চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেওয়া হয়। সঙ্গে শিক্ষা সনদের কপিও জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চেয়ারম্যান সাফ জানিয়ে দেন, সই করবেন না। সই না করায় গত ২৫ জানুয়ারি জুলফিকার ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

ইউএনও ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও ট্যাগ অফিসার হরিদাশ সরকারকে একই দিন নির্দেশনা দেন। তদন্ত শেষে ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি জন্মনিবন্ধনটি সংশোধনের সুপারিশ করে ইউএনওর কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। পরে সংশোধিত জন্মনিবন্ধনটি ইউপি কার্যালয়ের সার্ভেয়ারে যায়। অনলাইন থেকে সংশোধিত কপি সংগ্রহ করে ইউপি সচিব মো. ফিরোজ আলম সই করেন। কিন্তু এবারও চেয়ারম্যান সই করেননি।

এদিকে গত ৯ মার্চ জুলফিকার এ ঘটনায় ফের ইউএনওর কাছে চেয়ারম্যান সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে ৪ এপ্রিল ইউএনও এ ঘটনায় শুনানির জন্য উভয় পক্ষকে চিঠি পাঠান। ১১ এপ্রিল উভয়ের উপস্থিতিতে শুনানি হয়।

পরে ইউএনও চেয়ারম্যানকে সই দিতে বললে এ সময় চেয়ারম্যান জানান, আবেদনকারীর বাবা রামগতি পৌরসভার বাসিন্দা। এ জন্য তিনি সই করবেন না। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানকে লিখিত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। প্রতিবেদন দেওয়ার পর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কিন্তু এখন পর্যন্ত চেয়ার‌ম্যান সাখাওয়াত হোসেন ইউএনও বরাবর কোনো প্রতিবেদন জমা দেননি এবং আবেদনকারীর সনদে সইও দিচ্ছেন না।

এ নিয়ে ভুক্তভোগী জুলফিকার আলী চৌধুরী বলেন, চেয়ারম্যান জসিম আমার আপন চাচা। তার সঙ্গে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এ জন্যই তিনি খামখেয়ালিভাবে আমার ছেলের সংশোধিত জন্মনিবন্ধন ফরমে সই করছেন না। এ নিয়ে তিনি ইচ্ছে করে হয়রানি করছেন আমাকে।

ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. ফিরোজ আলম বলেন, আইনগতভাবে সংশোধনী ফরমে চেয়াম্যানের সই যৌক্তিক। কিন্তু চেয়ারম্যান উদ্দেশ্যমূলকভাবে দিচ্ছেন না। আমি আমার সই দিয়েছি।

চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন জসিম বলেন, জুলফিকার পৌরসভার নাগরিক। তার ছেলের জন্মনিবন্ধন সংশোধনী ফরমে আমি কীভাবে সই করব? নিউজ করেন, আমার কোনো ক্ষতি হবে না। আমি সই দেব না।

প্রসঙ্গত, আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান জসিমের বিরুদ্ধে জিম্মায় রাখা মহিষ বিক্রি, ছাগল চুরির মামলা, ছাত্রলীগ নেতার স্ত্রীকে অপহরণ ও জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। লক্ষ্মীপুর আদালত ও থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।