গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা পৌরসভার নারায়নপুর সুখনগর এলাকায় পৈত্রিক সূত্রে কেনা জমি ভোগদখলে বাঁধা দিচ্ছেন মধু মিয়া, তার ভাগ্নে আবুল হোসেন, ভাতিজা আবদুল মালেক, আসাদুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন ও জাহাঙ্গীর হোসেনসহ পরিবারের সদস্যরা।
মধু মিয়া ও আবুল হোসেন মিথ্যা হামলা ও মামলার অভিযোগ করে হয়রানী এবং প্রশাসন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করছেন। এর প্রতিকার চেয়ে শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধা শহরের গোরস্থান মোড়ে প্রেসক্লাব গাইবান্ধায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন একই এলাকার ৫ ভাই।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী হাসেন আলী। তিনি উল্লেখ করেন, গাইবান্ধা পৌরসভার নারায়নপুর সুখনগর এলাকার মৃত নসিবউল্লাহ বেপারী নামকরা গৃহস্থ মানুষ ছিলেন। নসিবউল্লাহ বেপারী তার আত্মীয়-স্বজনের জমি কিনে তাদেরকেই আবার চাষাবাদ করতে দেন। পরবর্তীতে নসিবউল্লাহ বেপারীর মৃত্যুর পর তার ছেলে খলিল মিয়া, আবদুল জলিল, হাসেন আলী, হোসেন আলী ও সাজু মিয়া খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন তাদের পৈত্রিক সূত্রে কেনা জমি মধু মিয়া ও তার ভাগ্নে আবুল হোসেন ভোগদখল করছেন।
বিষয়টি নিয়ে তাদের কাগজ দেখতে চাইলে তারা অপারগতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে বিষয়টির সুরাহার জন্য এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাউন্সিলর কামাল হোসেনের কাছে অভিযোগ দিলে কাউন্সিলর কামাল হোসেনের বাসায় এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে দুই দফায় মিটিং হয়। দুই মিটিংয়েই জমির সঠিক কাগজপত্র দেখাতে পারেননি মধু মিয়া ও আবুল হোসেন। ফলে মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত পক্ষে পান খলিল মিয়া, আবদুল জলিল, হাসেন আলী, হোসেন আলী ও সাজু মিয়ারা। এতে মধু মিয়া ও আবুল হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে কাউন্সিলর কামাল হোসেন, আমাদের ৫ ভাই ও ২ ভাতিজাকে জড়িয়ে মাস্তান দ্বারা হুমকি-ধমকি, বাড়ীতে হামলা ও লুটপাটের মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন আমাদের নামে। বিষয়টি নিয়ে সদর থানায় তিন-চারবার মিটিং ডাকা হলেও মধু মিয়া ও আবুল হোসেনসহ তাদের লোকজন কেউই থানায় উপস্থিত হননি। কেননা তাদের কাগজপত্র ঠিক নেই বিধায় তারা কোনো মিটিংয়ে তাদের কাগজপত্র দেখাতে পারছেন না এবং উপস্থিতও হচ্ছেন না। মধু মিয়া ও আবুল হোসেন বাহিরের বিভিন্ন লোকজনের সহায়তায় আমাদের হয়রানী করছেন।
লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রকৃতপক্ষে এসব জমি আমাদের পৈত্রিক সূত্রে কেনা। আমাদের জমিতে আমরা বসবাস করছি। উপরন্তু মধু মিয়া, ভাগ্নে আবুল হোসেন, ভাতিজা আবদুল মালেক, আসাদুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন ও জাহাঙ্গীর হোসেনসহ পরিবারের সদস্যরা আমাদের উপর হামলা করে একদিন রাতে টিনের ছাপড়া ঘর, বেড়াসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। পরে তারা আবারও সীমানার বেড়া ভেঙে নিয়ে গেছে। এবং বাহির থেকে লোকজন নিয়ে এসে এলাকায় টহল দেয়। যে কোন সময় আমাদের উপর হামলা হতে পারে। মধু মিয়া ও আবুল হোসেন বিভিন্ন লোকজনকে পাঠিয়ে দিয়ে আমাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি ও প্রতিকার দাবি করছি।
উল্লেখ্য যে, মধু মিয়া ও আবুল হোসেনসহ তাদের লোকজনরা গত বুধবার গাইবান্ধা পৌরসভার কাউন্সিলর কামাল হোসেনের নির্দেশে বিপ্লব মিয়া, পিপুল মিয়া, খলিল মিয়া, আবদুল জলিল, হাসেন আলী, হোসেন আলী ও সাজু মিয়াসহ আরও অনেকে জমি দখলের চেষ্টা করে আসছে মর্মে সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ করেন। শুধু তাই নয়, আবুল হোসেন কাউন্সিলর কামাল হোসেনকে একাধিকবার বিষয়টি নিষ্পত্তির কথা বললেও কাউন্সিলর নাকি উল্টা তাকেই নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বিভিন্ন মাস্তান দ্বারা নানা সময় হুমকি-ধমকি প্রদর্শন করেন। এবং তাদের চলাচলের রাস্তায় মাস্তান দ্বারা নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। একই সাথে উক্ত জমি কাউন্সিলর ৫০ হাজার টাকা শতকে ক্রয়ের প্রস্তাবও নাকি দেন। যা সম্পুর্ণ মিথ্যা।
এছাড়াও ওই সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়- খলিল মিয়া, আবদুল জলিল, হাসেন আলী, হোসেন আলী ও সাজু মিয়া, বিপ্লব ও পিপুলসহ অন্যান্যরা জমিতে প্রবেশ করে ঘর তোলার চেষ্টা করে এবং লাঠি, লোহার রড, বেকি, দা, কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র হাতে এলোপাথারীভাবে আবুল হোসেন ও তাদের লোকজনের উপর আক্রমণ করে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে মারধর করে। এবং ঘরের দামী আসবাবপত্র ভাংচুর এবং নগদ দেড় লাখ টাকা ও ৮ আনা ওজনের স্বর্নালংকার লুটপাট করে নিয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে এমন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেইনি। যা এলাকার লোকজন স্বাক্ষী দেবে। এদিন সদর থানার পুলিশও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা এর কোনো সত্যতাও পায়নি।
মধু মিয়া ও আবুল হোসেনসহ তাদের লোকজনের বিচার দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খলিল মিয়া, আবদুল জলিল, হোসেন আলী ও সাজু মিয়া প্রমুখ।