রাশেদুল ইসলাম রাশেদ: গাইবান্ধায় কোটা বিরোধী আন্দোলনের মিছিলে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রেন্টের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশের সামনেই তাদের উপর এই হামলা চালানো হয় বলে দাবি ছাত্রফ্রন্টের নেতৃবৃন্দের।
রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরের দিকে গাইবান্ধা সরকারি কলেজে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রফ্রন্টের নেতৃবৃন্দের দাবি, সারাদেশে ছাত্রদের কোটা বিরোধী আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে তারাও রোববার সকালে গাইবান্ধা সরকারি কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে একটি মিছিল করার চেষ্টা করে। এসময় গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের উপর হামলা চালায়, মারধর করে।
তবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এই হামলার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, আন্দোলনকারীরা কোনো ছাত্র নয়, তারা বহিরাগত। তারা আন্দোলনের নামে জ্বালো জ্বালো আগুন জালো স্লোগান দিচ্চ্ছিলো। মূলত তারা জামাআত, বিএনপি-ছাত্রদল ও ছাত্র শিবিরের নেতৃবৃন্দ ছিল।
এ সময় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কলেজ শাখার সভাপতি পরমানন্দ বলেন, 'কলেজে আমরা কোটার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী একটা মিছিল বের করি। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের বাঁধা প্রদান করেন। শুধু বাঁধাই নয়, তারা কলেজে মিছিল করতে দেবেনা। তারা আমাকে মারধর করেছে এবং আমাদের নেতাকর্মীকেও অনেকেই তারা মারধর করেছে। ছাত্রলীগ চায়না কোটার একটা সমাধান হোক। হামলা করে আমাদের আন্দোলন ঠেকানো যাবেনা।
এ সময় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন বলেন, " আমরা ছাত্রলীগ মনে করি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কোটা সংস্বার একটি যৌক্তিক ইস্যু। যৌক্তিক ইস্যুটি যখন একটি আইনি প্রক্রিয়ায় রয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীর উচিৎ আইনি প্রক্রিয়াটাকে সম্মান করা।
কিন্তু গাইবান্ধা সরকারি কলেজে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ইস্যু করে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে, ওই ব্যানারে যারা প্রথমে রয়েছে তারা শিক্ষার্থীরা না। তারা জামাআত, বিশেষ করে তারা ছাত্রদলের ক্যাডার। তারা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী না, তাদের ছাত্রত্ব নেই। তাদের যে সরকারি বয়সসীমা রয়েছে সেটিও নেই তাদের। তাহলে তারা কোন ইন্ধনে এখানে আন্দোলন করতে আসছে? আমার এটা প্রশ্ন বলেন এই ছাত্র নেতা।
এসময় এক প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, "আমরা তাদেরকে হামলা করিনি। আমরা তাদেরকে বুঝিয়েছি এখানে আন্দোলন করলে সাধারণ শিক্ষার্থীরাই করবে, আপনারা কেন? ছাত্রদল, জামাআত-শিবির কেন? আপনারাতো ছাত্রও নানা। পরে তারা নিজেরাই হট্টগোল করেছে বলেও জানান এই ছাত্র নেতা।
পরে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুল ইসলাম বিশাল বলেন, কলেজে ওরা মিছিল বের করেছে জ্বালোরে জ্বালো আগুন জ্বালো। কোটা আন্দোলনের সাথে এই স্লোগানের মানে দেখিনা। পরে ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আসলো ওনার বয়স প্রায় ৪৫ বছর, ওনার কোটা আন্দোলনে কী। আমরা বলেছি ছাত্ররা আন্দোলন করুক, আপনারা কেন? সেখানে ছিল ছাত্রদল, ছাত্র শিবিরের নেতৃবৃন্দ। ওখানে কোনো ঘটনায় ঘটেনি শুধু কথা হয়েছে বলেও দাবি করেন এই ছাত্র নেতা"।