ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গাইবান্ধার সেই ল্যাব সহকারি সবুজের ডিউটিরত পরিক্ষা কক্ষেই মিললো ডিভাইস!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
অক্টোবর ৩১, ২০২৪ ১:৪৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক:: গাইবান্ধায় বর্তমান সময়ের সমালোচিত সেই ল্যাব সহকারি মিজানুর রহমান সবুজের দায়িত্বরত পরীক্ষা কক্ষ থেকেই ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস সহ এক নারী চাকরি পরিক্ষার্থীকে আটক করেছে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গাইবান্ধার স্থানীয় একটি ডিভাইস চক্রের সাথে মিজানুর রহমান সবুজের জড়িত থাকার খবর যখন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ঠিক এই সময়ে সবুজের দায়িত্বরত কক্ষ থেকেই ওই পরিক্ষার্থীকে আটক করলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ডিভাইসসহ পরিক্ষা কেন্দ্র থেকে আটক হওয়া ওই পরিক্ষার্থীর নাম শারমিন জাহান (২৯)। যাহার পরিক্ষার রোল নম্বর-১১০১০০৯৩। পরিক্ষার্থীর বাড়ি জেলার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ইউনিয়নের তেলিয়ান গ্রামে। শারমিন ওই গ্রামের মো. এনামুল হকের স্ত্রী।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে পরিক্ষার্থী আটকের বিষয়টি মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা। ঘটনার পাঁচ দিনেও বিষয়টি প্রকাশ না পেলেও গতকাল মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা তা জানতে পারেন।

এরআগে গত ২৫ অক্টোবর ওই পরিক্ষার্থীকে গাইবান্ধার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্র থেকে আটক করা হয়। এদিন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখার চতুর্থ শ্রেণির অফিস সহায়ক (২০ তম গ্রেড) ৫৫টি শূণ্য পদের জনবল নিয়োগের লিখিত পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছিলো।

কেন্দ্রের ওই কক্ষের পরিক্ষার দায়িত্বে ছিলেন প্রতিষ্ঠানের ইংরেজি ইন্সট্রাক্টর রাশেদ মোশাররফ এবং ল্যাব সহকারি মিজানুর রহমান সবুজ। তাদের মধ্যে মিজানার সবুজ রংপুর পরিটেকনিকের একজন ল্যাব সহকারি। তিনি সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানে সংযুক্তিতে এসেছেন। যার বিরুদ্ধে চাকরিতে প্রবেশের মাত্র তিন বছরে শহরে অননুমদিত ৫ তলা ভবন সহ বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদের মালিক হওয়া এবং সম্পদের উৎস নিয়ে প্রশ্ন সংক্রান্ত একাধিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

পরিক্ষা কেন্দ্র, পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় গাইবান্ধা ডিসি অফিসের রাজস্ব শাখার চতুর্থ শ্রেণির “অফিস সহায়ক” পদের লিখিত পরীক্ষা সদর উপজেলার ১৭ টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে একটি কেন্দ্র গাইবান্ধা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ। ওই কেন্দ্রের ১২টি কক্ষের মধ্যে পরিক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই ৪০০১ নম্বর কক্ষে শারমিন নামের এক নারী পরিক্ষার্থীর শরীরে ইলেকট্রনিক্স জাতীয় কিছু একটা বেজে ওঠে। পরে উপস্থিত পরিক্ষার্থীরা দায়িত্বরতদের জানালে তারা পরিক্ষা কেন্দ্রে জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের ইনফর্ম করেন। পরে ওই কেন্দ্রে জেলা প্রশাসনের পক্ষে দায়িত্বে থাকা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই পরীক্ষার্থীকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। সেখানে পরিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদে তার শরীরে এবং কানে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে একজন নারী পুলিশের সহায়তায় অন্য একটি কক্ষে নিয়ে তার শরীর স্পর্শকাতর স্থান থেকে মোবাইলের সিমকার্ডসহ একটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোবাইল ফোনে সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, ‘ওই কেন্দ্রে পরিদর্শনকালে আমার কাছে খবর আসে নতুন ভবনের একটি কক্ষে এক পরিক্ষার্থীর কাছে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র বেঁজে উঠেছে। তথ্য অনুযায়ী গিয়ে শারমিন নামের ওই পরীক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে তিনি তার কাছে ডিভাইস থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তাকে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে লেডি পুলিশের সহায়তায় তার শরীরের ভিতর থেকে ব্যাটারিসহ একটি ডিভাইস বের করা হয়। এসময় কানের ভিতরের মাইক্রফোনটি অতিক্ষুদ্র হওয়ায় তাৎক্ষণিক সেটি বের করা যায়নি।

এসময় এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন, ওই পরিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র, পরিক্ষার খাতা এবং ডিভাইসটি সিলগালা করে আমরা তাকে এডিএম (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক) স্যারের কাছে সোপর্দ করেছি। তিনি থানার পুলিশের কাছে দিয়েছেন।

পরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মশিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন’ ওই সংক্রান্ত বিষয়ে আমরা মামলা করিনি।

তবে, জেলা প্রশাসনের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ওই পরীক্ষার্থীকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেওয়া হলে মেয়েটি সেখানে প্রচন্ড অসুস্থ্য হয়েছিলো এবং তার ছোট দুটি বাচ্চা থাকায় মানবিক বিবেচনায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, তাকে প্রয়োজনে যে কোনো মূহুর্তে ডাকা হলে তিনি উপস্থিত হতে বাধ্য থাকবেন সেই মুচলেকায় তাকে ছাড়া হয়। তথ্য উপাত্ত সংগ্রহে চক্রের বিষয়ে নজর রয়েছে। কোনো ধরণের ক্লু পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পথ খোলা রয়েছে বলেও জানায় সূত্রটি।

সর্বশেষ গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মোয়াজ্জম আহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে নিশ্চিত হওয়া যায় ওই পরীক্ষার্থীকে শর্ত স্বাপেক্ষে মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক বলেন, মেয়েটি এখানে এসে প্রচন্ড অসুস্থ্য হয়েছিলো এবং তার ছোট দুটি বাচ্চা রয়েছে। মানবিক বিবেচনায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে, তাকে প্রয়োজনে যে কোনো মূহুর্তে ডাকা হলে তিনি বাধ্য থাকবেন এই মুচলেকায় ছাড়া হয়েছে। তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ চক্রের বিষয়ে নজর রয়েছে। কোনো ধরণের ক্লু পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পথ খোলা রয়েছে।

এদিকে, এই নিয়োগের লিখিত পরিক্ষার পরদিন (২৬ অক্টোবর) লিখিত পরীক্ষায় উর্ত্তীন্য হওয়া পরিক্ষার্থীদের মধ্যে ২২ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা করে জেলা প্রশাসন। ভাইভা পরিক্ষা দিতে যাওয়া ওই ২২ পরিক্ষার্থীদদের লিখিত পরিক্ষার খাতার সাথে ভাইভা বোর্ডে তাদের নিজস্ব হাতের লেখার মিল না পাওয়া এবং লিখিত পরিক্ষায় প্রক্সি নেওয়ার অভিযোগে সদর থানায় এই মামলা দায়ের করেন রাজস্ব শাখার ক্রেডিট চেকিং কাম সায়রাত সহকারী নুরুল ইসলাম আকন্দ। ২২ আসামির মধ্যে ফুলছড়ি উপজেলার ৬ জন, সদর, সুন্দরগঞ্জ ও গোবিন্দগঞ্জের প্রত্যেক উপজেলায় ৫ জন করে এবং পলাশবাড়ি উপজেলার ১ জন।

আপনার মন্তব্য লিখুন