ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় ক্ষ্যাপাটে মহিষের আঘাতে সুইটি ও ফারহানা নামে দুই শিশু আহত হয়েছেন। এ সময় শিংয়ের আঘাতে একটি গরু মারা গেছে।
শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামের মধ্যপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ফারহানা নোয়াগাঁও ইউনিয়নের তেরকান্দা গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে। অন্যদিকে, সুইটি একই গ্রামের আতাহার আলীর মেয়ে। তারা সম্পর্কে ফুফু-ভাতিজী।
পুলিশ ও গ্রামবাসী জানায়, আগামী কুরবানীর ঈদে বিক্রির জন্য স্থানীয় মহিষ ব্যবসায়ী আব্দুল হক ১২টি মহিষ কিনেন। মহিষগুলোকে প্রতিদিনের মতো তেরকান্দা গ্রামের বিলে গো-চারণ জমিতে ছেড়ে আসেন ব্যবসায়ী আব্দুল হক। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মহিষগুলোকে বিল থকে ফিরিয়ে আনার সময় হঠাৎ করে একটি মহিষ ক্ষ্যাপে গিয়ে তেরকান্দা মধ্যপাড়ার রেপস আলীর বাড়িতে ঢুকে যায়। এসময় বাড়ির উঠানে সুইটি ও ফারহানা নামে দুই শিশু খেলাধুলা করছিল। মুহূর্তেই মহিষের শিং এর আঘাতে ওই দুই শিশু গুরুতর আহত হয়। এসময় শিং এর আঘাতে একটি গরু মারা যায়।
ঘটনা সম্পর্কে আহত শিশু সুইটির চাচা রতন মিয়া বলেন, সন্ধ্যার দিকে মহিষটি গ্রামের মানুষকে ধাওয়া করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমাদের বাড়ির উঠানে খেলারত অবস্থায় আমার ভাতিজি সহ দুই শিশুকে আহত করে। পরে আহত দুই শিশুকে উদ্ধার করে প্রথমে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা পর তাদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, মহিষের মালিক আব্দুল হক আহতদের কোনও খোঁজ খবর নেননি। গত এক সপ্তাহ আগে তাকে জানানো হয়েছিল, মহিষগুলোকে যেন নিয়ন্ত্রণ করে রাখেন। কিন্তু তা তিনি শোনেন নি। এ ব্যাপার মামলা করবেন বলেও জানান সুইটির চাচা রতন মিয়া।
শিশু আহত হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা.আরিফুজ্জামান হিমেল জানান, মহিষের শিং এর আঘাতে দুইটি শিশুই গুরুতর আহত হয়েছে। আহত দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সার্জারি বিভাগে ভর্তি দেয়া হয়েছে। সুইটির পিঠে ও ফারহানার মাথার আঘাতটি খুবই বিপজ্জনক। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ঘটনা সম্পর্কে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল আলম জানান, মহিষের আঘাতে দুই শিশু আহত এবং একটি গবাদিপশু মারা গেছে বলে জেনেছি। এমন খবর পেয়ে সরাইল থানার উপ-পরিদর্শক এসআই জাকির হোসেন খন্দকারকে রাতে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এখনও পাগলা মহিষটি আটক করা যায়নি। মহিষটি কোথায় আছে, তাও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।