আশরাফুল হক, লালমনিরহাট”লালমনিরহাটে হাতীবান্ধায় বিজেতা সীডস কোম্পানীর বাহুবলী ৫৫৫ ভূট্টার বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছেন কয়েক শতাধিক কৃষক। বীজ থেকে চারা না হওয়ায় কান্না থামছে না কৃষকের মাঝে। এতে করে কৃষকদের লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বীজ সরবরাহ কারী
ডিলারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার অফিস তালা বদ্ধ রযেছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি কৃর্তপক্ষ।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, এ বছর ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে ভূট্টার লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই এলাকায় ভূট্টার চাষ ভালো হওয়ায় দিনদিন চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভূট্রা চাষাবাদে এলাকার মানুষের ভাগ্যেও পরিবর্তন ঘটেছে। কিন্তু এ বছরে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কোম্পানী খারাপ বীজ সরবারাহ করে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। বীজ বোনার পর তা থেকে চারা হচ্ছে না। আবারও কখনো বীজ থেকে চারা হয়ে গাছ হলেও সেই গাছে ফল হচ্ছে না। বিজেতা সীডস কোম্পানীর বাহুবলী ৫৫৫ ভূট্টার বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছেন হাতিবান্ধার কয়েক শতাধিক কৃষক। হাজার হাজার টাকা খরচ করে বীজ থেকে চারা না হওয়ায় কান্না থামছে না কৃষকের।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাতিবান্ধা উপজেলার গোতামারী এলাকার জমিতে শুধু ধূ ধূ মাটি কোন চারা নেই। গত এক সপ্তাহেও বীজ থেকে একটি চারাও হয় নি। এতে করে দিশে হারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
কৃষক বলেন, আমি দৈই খাওয়ার হাট সেতু সার ঘর মুজিবুল হক মজুর দোকান থেকে বাহুবলী ৫৫৫ ভূট্টার বীজ কিনে এনে সঠিক পদ্ধতিতে রোপন করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি চারাও জন্ম নেয়নি। দোকানদারকে বিষয়টি বলেছি। তিনি বলেছেন কোম্পানীর লোকের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিবেন। এখন আমি কি করবো। এক দিকে বীজ আবার কিনতে হবে অন্য দিকে চাষাবাদে ডাবল খরচ হবে। এ সময় আরেক কৃষক নার্গিস নাহার কান্না করতে করতে বলেন, আমি ১২ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে বাহুবলী ৫৫৫ ভূট্টার বীজ রোপন করেছি। কিন্তু বীজ থেকে একটিও চারা জন্ম নেয়নি বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
দৈই খাওয়া হাটের সেতু সার ঘরের মালিক মুজিবুল হক মজু বলেন, আমি বিজেতা সীডস কোম্পানীর বাহুবলী ৫৫৫ ভূট্টার বীজ ৫০০ কেজী বিক্রয় করছি। বীজ থেকে একটিও চারা গজায়নি। কোম্পানীর ডিলার আল আমিনকে বিষয়টি অবগত করেছি।
এ দিকে হাতীবান্ধা হাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বীজের দোকান ঘেরাও করেছেন কৃষকরা, তাদের দাবি বাহুবলী ৫৫৫ ভূট্টার বীজ থেকে চারা জন্ম নিচ্ছেন না। এ সময় কথা হলে লিটন সীড ষ্টোরের মালিক আবুল কাসেম বলেন, কৃষকরা এসেছেন বীজ থেকে চারা জন্ম নিচ্ছেন না, সে কারনে। আমরা চেষ্টা করছি বীজ ডিলার আল আমিনের সাথে যোগাযোগের জন্য কিন্তু তিনি কোন পাত্তা দিচ্ছেন না।
বীজ ডিলার আল আমিন বলেন, আমি ঢাকায় আছি। যাদের বীজের সমস্যা হয়েছে তাদেরকে নতুন করে আবার বীজ ফেরত দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তাদের বীজ সংগ্রহ করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) দুলাল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কৃষি কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।