মোঃ সাহাজুদ্দিন সরকার,গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের কালিয়াকৈরে টায়ার জালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে কারখানার শ্রমিকরা। অষ্টম দিনের মতো শ্রমিক বিক্ষোভে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে মৌচাক, কোনসবাড়ী সফিপুর, চান্দরা, পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় শ্রমিক-পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় দোকানপাট, হাসপাতাল ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ কারখানা শ্রমিকরা। কয়েকটি পয়েন্টে শ্রমিকরা পুলিশ সদস্যদের ঘেরাও করে রাখে। মহাসড়কে টায়ার ও মালামাল জ্বালিয়ে অবরোধ করে। পুলিশ মহাসড়ক ও ভাঙচুর ঠেকাতে আপ্রান চেষ্টা করে।
এর ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার হাজার হাজার শ্রমিক লাঠি, লোহার রড নিয়ে সড়কে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে শ্রমিকরা সফিপুর এলাকায় মহাড়কের পাশে অবস্থিত তানহা নামক প্রাইভেট হাসপাতালে হামলা চালায়। বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা ওই হাসপাতালে তা-ব চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে হাসপাতলের প্রচুর ক্ষতিসাধন করে। এ সময় হাসপাতালের ম্যানেজার গোলাম মোস্তফাসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
শ্রমিকরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়কে বিক্ষোভকালে অরাজকতার সৃষ্টি করে। এ সময় শ্রমিকদের বিক্ষোভে বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। মানুষ দিক বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। এসময় শ্রমিকরা দফায় দফায় হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ সফিপুরে এসে টিয়ারসেল, ক্যাদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেট ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে।
পুলিশ চলে গেলে শ্রমিকরা পূনরায় থেমে থেমে হামলা চালায় ও মহাসড়কে বিক্ষোভ করে। এছাড়া উত্তেজিত শ্রমিকরা কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কের পশ্চিমচান্দরা এলাকায় ওয়ালটন প্লাজার সামনে একটি পিকআপে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় শ্রমিকরা মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ি ও সফিপুরে পুলিশ বক্সে হামলা চালায়। এতে মানুষের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমিকদের দাবি গতকাল দুই শ্রমিককে হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও ২৩ হাজার টাকা বেতন বৃদ্ধি করতে হবে।
সকালে উপজেলার মৌচাক বাজার এলাকায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে এবং মহাসড়কে ১০-১২টি যানবাহন ভাঙচুর করে। এ সময়ে শিল্প পুলিশ ও থানা পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শতশত শ্রমিক পুলিশদেরকে ধাওয়া করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে মৌচাক বাজার এলাকায় অবস্থিত কালিয়াকৈর থানাধীন পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থান নেয়। এ সময়ে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে উল্টো তারা আমাদের উপর হামলা করে। টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আর পুলিশ বক্স ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, কারখানা ও যানবাহন ভাংচুর কারীরা প্রকৃত শ্রমিক নয়। প্রকৃত শ্রমিকরা এসব করতে পারে না। তবে এসব ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।