মোঃ সাহাজুদ্দিন সরকার,গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুর কালিয়াকৈ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিন দিন ধরে ৯ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রীকে নিয়ে উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতমঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ছাত্রীকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করা যায়নি। এ ঘটনায় অভিযোগ হলে ছাত্রীসহ শিক্ষককে খুঁজছে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ। এ নিয়ে এলাকায় চলছে নানা সমালোচনা ঝড়।
মেয়েকে ফিরে পেতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আকুতি তার বাবা।
ওই শিক্ষক হলেন ঢাকার ধামরাই থানা জামিরাবাড়ী এলাকার বেলায়েত হোসেনের ছেলে রতন আলী। তিনি সাটুরিয়া শোলহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
এলাকাবাসী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার সাটুরিয়াচালা এলাকার সাটুরিয়া শোলহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রতন আলী এ ঘটনা ঘটান।
গত ছয় মাস আগে তিনি ওই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ওই বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের শিক্ষক। এরপর ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবসরে গেলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হন রতন আলী। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার তিনি তার চিকিৎসার কথা বলে ৩ দিনের ছুটি নিয়ে চলে যান।
এরপর রবিবার সকালে প্রাইভেট পড়ার কথা বলে ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীও বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। বিষয়টি বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা ও পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের কোনো হদিস পায়নি। ছাত্রীকে নিয়ে উধাও হওয়ার ঘটনায় ওইদিনই তার বাবা বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর থেকে উধাও হওয়া ছাত্রীসহ ওই শিক্ষককে খুঁজছে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ। এ ঘটনার পর ওই বিদ্যালয় ছাড়াও আশপাশের বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিভিন্ন এলাকায় নানা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
তবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়ম-মাফিক আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে মেয়েকে ফিরে পেতে নানা আকুতি জানাচ্ছেন পরিবারের লোকজন। এসময় তার বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ওই শিক্ষকের স্ত্রী-সন্তান থাকার পরও আমার অপ্রাপ্ত বয়সের অবুঝ মেয়েকে ফুসলিয়ে নিয়ে গেছে। সুস্থ অবস্থায় আমার মেয়েকে ফেরত চাই। আর শিক্ষক নামের ওই অমানুষের কঠিন বিচার চাই।
ওই বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য শামীম আল রাজী জানান, আমার মনে হচ্ছে এই ঘটনা একটি পরিকল্পিত ঘটনা। এ ঘটনা শুনার পর ওই শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে ঘটনাটি পুরোপুরি প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক ফাঁড়ি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ হয়েছে। তবে ওই ছাত্রীকে উদ্ধারসহ শিক্ষককে আটকের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, বিষয়টি জানার পর ওই শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি উনাকে পাচ্ছি না। তবে এ বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।