পটুয়াখালী প্রতিনিধি: জেলা শহরের একেএম কলেজে তিন পদে নিয়োগ চুড়ান্ত করতে আদালত থেকে পাঠানো নোটিশ ফেরত দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ আ.ন.ম সাইফুদ্দিনের বিরুদ্ধে। ওইদিন আদালত অবমাননার বিষয়টি এড়াতে তাৎক্ষনিক কলেজ বন্ধের ঘোষনা করে উপস্থিত শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের কলেজ ত্যাগের ঘোষনা দেন তিনি। একেএম কলেজটির ব্যবস্থাপনার কমিটির বর্তমান সভাপতি হচ্ছে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আফজাল হোসেন। ওই নেতার বদৌলতে‘ই সাইফুদ্দিন অধ্যক্ষ পদে আসীন হয়ে স্বেচ্ছাচারীতায় লিপ্ত রয়েছে। নিয়োগের বিরুদ্ধে মামলা হলে ভুক্তভোগীদের প্রভাবিত করে লিখিত মুসলেখাও নেন অধ্যক্ষ। এসব ঘটনায় কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভ হলেও মুখ খুলছেনা কেউ। এছাড়াও মামলার রেষে ভুক্তভোগীদের হাঝিরা স্বাক্ষর ও বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। অভিযুক্ত অধ্যক্ষ বলেন-“আমি ঢাকায় আছি,কোন কর্মকর্তার পক্ষে আদালতের পাঠানো কাগজ পিয়নের রাখার এখতিয়ার নাই। কলেজ বন্ধের বিষয়ে আমি জানিনা,দায়িত্বপাপ্ত অধ্যক্ষ জানেন। অথচ সুত্র বলছে-আদালত থেকে জারীকারক কলেজে উপস্থিত হলে অধ্যক্ষ বিকল্প পথে কলেজ ত্যাগ করেন।
ভুক্তভোগী দিবাকর নন্দী মো. আইয়ুব আলী এবং হরেকান্ত বলেন-নিয়োগ বিধি অনুযায়ী ২০০০ সাল থেকে উক্ত প্রতিষ্ঠানে অফিস সহায়ক পদে চাকুরি করছেন। এ পর্যন্ত কয়েকটি পদে নিয়োগ ও এমপিওভুক্তি চুড়ান্ত হলেও তাদের অগ্রগতি হয়নি। সবশেষ ২০২২ সালে তারা এমপিওভুক্তি হতে শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ সাইফুদ্দিন দুদফা সুপারিশ পাঠান শিক্ষা অধিদপ্তরে। ২০২৩ সালের ২০ আগষ্ট শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাস এমপিও নীতিমালায় প্যাটার্নভুক্ত শূন্য পদে এমপিওভুক্তির অনুমতি দেন। এসব সিদ্ধান্ত চুড়ান্তে পৌছালে অজ্ঞাত কারনে বেকে বসেন অধ্যক্ষ। পরবর্তীতে তিনটি পদে নিয়োগ দিতে বিজ্ঞাপ্তি দেন। এতে তারা হতাশ হয়ে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারী পটুয়াখালী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। এতে বিবাদী করা হয় অধ্যক্ষ, ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এবং শিক্ষা অধিদপ্তরকে। আদালতের বিচারক আসীফ এলাহী বিবাদীদের কারন দর্শানোর নোটিশ করলে অধ্যক্ষ আদালতে সময় নেন। সময় নিয়ে অভিযুক্ত পদ গুলোতে দ্বিতীয় দফা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন অধ্যক্ষ। পরে ১৯ মার্চ দ্বিতীয় দফা নিয়োগ আটকাতে একই আদালতে মামলা করেন তারা। দ্বিতীয় দফা মামলায় বিবাদীদের তিন দিনের সময় বেধে কারন দর্শানোর নোটিশ করেন আদালত। ওই নোটিশ নিয়ে আদালতের জারীকারক মফিজুল ইসলাম ২১ মার্চ দুপুরে প্রতিষ্ঠানে হাঝির হলে লিখিত ভাবে নোটিশ না রেখে তাকে ফিরিয়ে দেন। এরপর প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষনা দিয়ে উপস্থিত শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের কলেজ ত্যাগের নির্দেশনা দিয়ে বিকল্প পথে কলেজ ত্যাগ করেন অধ্যক্ষ। ২১ মার্চ আলোচ্য অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলেও মুখ খুলছেনা কেউ।
অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ বলেন-মামলার বাদীদের নিয়োগ ও যোগদানে অনেক ত্রুটি রয়েছে। যে কারনে এমপিওভুক্তি হতে জটিলতা চলছে। তবে এসব নিয়ে নিউজ হলে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন হবে।