খাজা রাশেদ,লালমনিরহাট:: তিস্তা নদীর পানি কমে বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাটে তিস্তাপাড়ে প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে নামতে শুরু করেছে পানি। তবে পানি কমতে শুরু করলেও প্লাবিত গ্রামের মানুষের কষ্ট কমেনি।
রোববার (১৬ জুলাই) সকালে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৮২ সেন্টিমিটার। যা স্বাভাবিকের (৫২ দশমিক ১৫ সে.মি.) চেয়ে ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ হঠাৎ বাড়তে থাকে। পরদিন সকালে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় তিস্তার পানি প্রবাহ। ফলে তিস্তার চরাঞ্চল ও বাম তীরের নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়ে প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ডুবে যায় কৃষকের ফসল। ভেসে যায় পুকুরের মাছ। সকাল থেকে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকেলে পুনরায় কমতে শুরু করে।
স্থানীয়রা জানান, তিস্তার পানি প্রবাহ বিপৎসীমার নিচে নেমে আসায় বন্যা পরিস্থিতিরও অনেকটা উন্নতি ঘটেছে। কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। এ বন্যায় জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল। তারাও মুক্ত হতে শুরু করেছেন। বন্যার পানিতে তালিয়ে গেছে শত শত হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত। পানির স্রোতে ভেসে গেছে মৎস্য চাষিদের স্বপ্ন। কয়েক শত পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎস্যচাষিরা।
এ দিকে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। তিস্তার বাম তীরের সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা, আদিতমারী উপজেলার কুটিরপাড়, চন্ডিমারী, বালাপাড়া এলাকায় নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।
এদিকে বন্যাকবিলত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজামান আহমেদ। তিনি বলেছেন, বন্যায় যেন মানুষ কষ্টে না থাকে সেই লক্ষ্যে ডিসিসহ ইউএনওরা দেখছেন। এছাড়াও তাদের শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আশা করছি তিস্তা পাড়ের মানুষের যে কষ্ট সেটি একদিন থাকবে না। আদিতমারীতে ৫০ কেটি টাকায় একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানকার মানুষ এখন অনেক ভালো আছেন।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা জানান, বৃষ্টিপাত না হওয়া আর উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসা বন্ধ হওয়ায় দ্রুত কমেছে তিস্তা নদীর পানি। গতকাল সকালে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় তিস্তাপাড়ের চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে নদীর পানি নামতে শুরু করেছে। এখনো বেশি কিছু এলাকার ঘর-বাড়িতে নদীর পানি রয়েছে। আপাতত লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির কোনো শঙ্কা নেই বলে তিনি জানান।