ঢাকাসোমবার , ৩০ নভেম্বর ২০২০
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

এবার লালমনিরহাটের সেই উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক বরখাস্ত!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
নভেম্বর ৩০, ২০২০ ১০:১৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট।। অসাদাচরনসহ ৬টি কারন উল্লেখ করে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়।

সোমবার(৩০ নভেম্বর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিনসহ ১৮জন অফিসারের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৬টি বিষয়ে অভিযুক্ত করে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসকে সাময়িক ভাবে বরখাস্থ করা হয়েছে। এ জন্য ৪৬.০০.০০০০.০৪৬.২৭.০৩৬.২০২০-৯৪৮ স্মারকে প্রজ্ঞাপন জারি করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব নুমেরী জামান।

বরখাস্থ হওয়া চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার বিভাগের অভিযোগগুলো হলো, আদিতমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে অসাদাচরণ, দুর্ব্যবহার, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকী প্রদান করেছেন বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন অভিযোগ দায়ের করেন। ফারুক ইমরুল কায়েস উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দফতরে আর্থিক বিষয়ে অনৈতিক দাবি আদায়ের চেষ্টা করেন। উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা নুরেলা আখতারের সাথে অশোভন আচরন প্রদর্শন করেন। চেয়ারম্যানের এহেন কর্মকান্ডে উপজেলার কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি করে জনস্বার্থ মারাত্বভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। চেয়ারম্যানের এহেন কার্যকলাপ রাস্ট্র বা উপজেলা পরিষদের স্বার্থের পরিপন্থি। বিধায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ সালের এবং সংশোধিত আইন ২০১১ এর ১৩(খ)(১) ধারা অনুসারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ হতে ফারুক ইমরুল কায়েসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। উক্ত পদে সকল কার্যক্রমসহ আর্থিক ক্ষমতা প্রদান করা হয় উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানকে। এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে অসাদাচরন ও অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দের অভিযোগ ইউএনওসহ ১৮জন অফিসার জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে প্রকাশ, আদিতমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিধিবিধান ও নীতিমালা লংঘন করে কাজের জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে সেই দফতরের কর্মকর্তাকে অশ্রব্য ভাষায় গালমন্দসহ প্রাণনাশের হুমকিও দেন চেয়ারম্যান। বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) মাসিক সমন্বয় সভায় ভিজিডি ও মাতৃত্ব ভাতার তালিকায় নিজের অংশ দাবি করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। যা বিধি সম্মত না হওয়ায় ইউএনও নাকোচ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভা অসমাপ্ত রেখে চলে যান চেয়ারম্যান। এরপর চেয়ারম্যান ইউএনও অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা লোক দিয়ে খুলতে গেলে তার ছবি তোলেন ইউএনও মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন। একইসঙ্গে ক্যামেরা খুলে ফেলার কারণ জানতে চাইলে ইউএনওকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করা হয় ‘(বেশি কথা বললে পিটিয়ে নরসিংদী পাঠিয়ে দেবো। এভাবে গালমন্দ করা হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় ওই দিন রাতে ইউএনওসহ ১৮জন অফিসার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ১৬ নভেম্বর ৩৭ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে পাঠায় জেলা প্রশাসন। এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে মঙ্গলবার(২৪ নভেম্বর) সরেজমিন তদন্ত করেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওহাব ভূঞা।
নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে রোববার(১৫ নভেম্বর) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় জিডি(নং৫৫৮) করেন ইউএনও মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন। একই দিন যৌথ স্বাক্ষরীত উপজেলার রাজস্ব তহবিলের ব্যাংক হিসাবের ১৯টি চেকের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস। যা নিয়েও আদিতমারী থানায় জিডি(নং ৫৫৯) করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্টানোটাইপিষ্ট হাবিবুর রহমান।

একই ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে ইউএনও’র বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় জিডি করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস। ইউএনওসহ অফিসারদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনায়ন করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস। ইউএনও’র নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানান তিনি। ঘটনার পর থেকে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ দিকে ৯ দফা অভিযোগ তুলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের প্রতি অনাস্থার প্রস্তাব তুলে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছেন উপজেলার ৮জন ইউনিয়ন পরিষদ(ইউপি) চেয়ারম্যান।

আপনার মন্তব্য লিখুন