আশরাফুল হক, লালমনিরহাট।। ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে বদলী হলেও অবশেষে কথা রাখেনি লালমনিরহাট কাষ্টমস এর আলোচিত সেই সিপাহী রনি বাবু! অনুসন্ধানে কাষ্টমস সিপাহী রনি বাবু ও ধীমান চন্দ্রের ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ও অডিও ক্লিপ পাওয়ার পর তার কাছে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন, তার বিরুদ্ধে নিউজ করে তাকে বদলি করাতে পারলে তিনি মিষ্টি খাওয়াবেন।
এরপর গেল ১০ মার্চ এ বিষয়ে পত্রিকায় সচিত্র একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তোলপাড় অবস্থার সৃষ্টি হয়। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এরই মধ্যে সিপাহী রনি বাবু লালমনিরহাট সদর থেকে পাটগ্রাম অফিসে যোগদান করেছে। একই সাথে ঘুষ গ্রহনের অভিযোগে অভিযুক্ত সিপাহী রনি বাবু ও ধীমান চন্দ্রের বিরুদ্ধে ৪ সদস্যেও একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে জানাগেছে। একজন রাজস্ব কর্মকর্তা ও তিনজন ইন্সপেক্টরের সমন্বয়ে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগে সহকারী কমিশনার (অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব) আব্দুল হান্নান। উল্ল্যেখ্য, গেল ১ মার্চ রাত ১১ টায় শহরের মিশনমোর এলাকায় অবস্থিত এস আর পার্সেলের সামনে একটি পিকআপ ও দুটি অটো ভর্তি কয়েলের কার্টুন আটক করে লালমনিরহাট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগে কর্মরত সিপাই রনি বাবু ও ধীমান চন্দ্র রায়। অভিযোগ ছিলো এস আর পার্সেলে কন্ডিশনের মাধ্যমে সরকারী ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে এই কয়েলগুলো লালমনিরহাটে এসেছে। সেই কয়েলগুলো আটক করে সাড়ে সাত হাজার টাকা ঘুষ গ্রহন করে এবং বাকি টাকা বিকাশে পাঠানোর শর্তে তাদের কয়েলগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘুষ গ্রহনের সেই ঘটনার বিশ মিনিটের একটি ভিডিও ফুটেজ সাংবাদিকদের হাতে চলে আসে।
এ বিষয়ে, বুধবার (১০ মার্চ) বদলি হলে মিষ্টি খাওয়াবো’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরেই নড়েচড়ে বসে ওই কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। বিভিন্ন অনলাইন/পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরেই ওই দিনেই অভিযোগ তদন্তে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সিপাহী রনি বাবু ও ধীমান চন্দ্র রায়কে প্রত্যাহার করা হয়। রনি বাবুকে প্রত্যাহার করে জেলার পাটগ্রাম উপজেলা সার্কেলে দ্বয়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং ধীমান চন্দ্র রায়কে লালমনিরহাট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগেই সংযুক্ত রাখা হয়েছে।
লালমনিরহাট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের সহকারী কমিশনার (অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব) আব্দুল হান্নান বলেন, সংবাদটি আমার দৃষ্টিগোচর হলে ওই দিনই আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করি। এই তদন্ত কমিটি আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে। অভিযোগের প্রমান পাওয়া গেলেই নেওয়া হবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্থা।
প্রসঙ্গত ফলোআপ সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অভিযুক্ত সিপাহী রনি বাবু ও ধীমান চন্দ্র বিভিন্ন অবৈধ বিড়ি কারখানার মালিকদের মাধ্যমে অনৈতিক প্রস্তাব অব্যাহত রেখেছেন যা পরবর্তী প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হবে।
ভিডিও লিং
https://youtu.be/mG2es-5tUWo