স্টাফ রিপোর্টার:: ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) ১০ আগস্ট সকাল থেকে অনলাইনে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। গত বছরের মতো এবারও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে তিন ধাপে আবেদন গ্রহণ করা হবে। প্রথমধাপে ২০ আগস্ট পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ পাবেন শিক্ষার্থীরা। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে। সর্বশেষ তৃতীয় ধাপে শিক্ষার্থীদের ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হবে। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে কলেজে ভর্তি শুরু হবে। আর একাদশে ক্লাস শুরু হতে পারে ৮ অক্টোবর থেকে।
পুরো আবেদন চলাকালে দুইদিন অনলাইন আবেদন বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও ৬ সেপ্টেম্বর জন্মাষ্টমীর ছুটির জন্য অনলাইন সার্ভিস ও কল সেন্টার বন্ধ থাকবে।
ভর্তি ও ক্লাস:
তিন ধাপে আবেদন, ফলাফল ও মাইগ্রেশন শেষ হওয়ার পর ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তি চলবে। ক্লাস শুরু হবে ৮ অক্টোবর থেকে।
আবেদন ফি কত:
নীতিমালায় গত বছরের মতো এবারও আবেদন ফি ১৫০ টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি রেজিস্ট্রেশন ফি করা হয়েছে ৩৩৫ টাকা। শুধুমাত্র অনলাইনে আবেদন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
অনলাইনে আবেদন:
অনলাইনে আবেদনের জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইটে একাদশ শ্রেণির ভর্তির আবেদন করা যাবে। অনলাইন ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ম্যানুয়ালি ভর্তির আবেদন নেওয়া হবে না। আবেদন ফি দিয়ে সর্বনিম্ন পাঁচটি এবং সর্বোচ্চ দশটি কলেজে পছন্দ দিতে হবে। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে এর মধ্য থেকে তার মেধা, কোটা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি মাত্র কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
নির্বাচিত শিক্ষার্থীকে ৩৩৫ টাকা দিয়ে প্রাথমিকভাবে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। আগে প্রাথমিক নিশ্চায়ন ফি ছিল মোট ৩২৮ টাকা। তবে আগে ১৩৫ টাকা থাকা রেজিস্ট্রেশন ফি ৭ টাকা বাড়িয়ে ১৪২ টাকা করায় মোট ফি বেড়েছে।
যারা ম্যানুয়ালি আবেদন করবে:
পুরো ভর্তি প্রক্রিয়াটি অনলাইনে হলেও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বোর্ডে ম্যানুয়ালি ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। প্রবাসীদের সন্তান অথবা বিকেএসপি থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী অথবা খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিভাগীয় অথবা জাতীয় পর্যায়ে অসামান্য অবদানের জন্য পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে বোর্ড উপযুক্ত প্রমাণপত্র যাচাই-বাছাই করে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা করে দেবে।
আবেদনের যোগ্য যারা:
২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে দেশের যেকোনো শিক্ষা বোর্ড এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি অথবা সমমান পরীক্ষা পাস করা শিক্ষার্থীরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যান্য বছরে পাস করা শিক্ষার্থীরাও ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। বিদেশি কোনো বোর্ড বা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা সনদের মান নির্ধারণের পর ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।
বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেকোনো (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) বিভাগে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। মানবিক বিভাগ থেকে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে আবেদন করা যাবে। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকেও এ দুই বিভাগের একটিতে আবেদন করা যাবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে পাস করার শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর হবে।
ভর্তিতে ৭ শতাংশ কোটা বহাল থাকছে:
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট শূন্য আসনের ৯৩ শতাংশ মেধা কোটা হিসেবে বিবেচিত হবে। এসব শূন্য আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারী সন্তানদের জন্য রাখা হয়েছে। এসব আসনে শিক্ষার্থী না থাকলে তা মেধা কোটায় বিবেচিত হবে। কোটার ক্ষেত্রে আবেদনকারী সংখ্যা বেশি হলে মেধার ভিত্তিতে তালিকা করতে হবে।
প্রাপ্ত নম্বর মাথায় রেখে কলেজ পছন্দ করতে হবে:
ভালো কলেজগুলোতে একই জিপিএ পেয়ে ভর্তির সুযোগ পেল, আমি কেন পাইনি– প্রতি বছর এমন অভিযোগ আসে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। তাদের দাবি, আমিও জিপিএ-৫ পেয়েছি, যে ভর্তি সুযোগ পেয়েছে সেও জিপিএ-৫ পেয়েছে। তাহলে আমি কেন ভর্তির সুযোগ পাইনি? এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজে শাখার একজন কর্মকর্তা বলেন, এক্ষেত্রে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনালে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে (জিপিএ নয়) ভর্তির মেধাক্রম তৈরি করা হবে। প্রার্থী যেন তার প্রাপ্ত নম্বর মাথায় রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পছন্দের তালিকা দেন। নয়তো জিপিএ-৫ পাওয়ার পরও অনেকেই প্রথম ও দ্বিতীয় তালিকায় জায়গা পাবে না।
উদাহরণ দিয়ে তারা বলেছেন, ধরা যাক ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজে আসন আছে আড়াই হাজার। সেখানে প্রথমেই ভিকারুননিসা থেকে পাস করা ছাত্রীরা অগ্রাধিকার পাবে। এরপর যে সিট ফাঁকা থাকবে তাতে বাইরে থেকে ভর্তি করানো হবে। সেখানে যদি পাঁচশ আসনে বাইরে থেকে ছাত্রী নেওয়া হয়, সেই আসনের বিপরীতে ২০ হাজার আবেদন পড়লে সাড়ে ১৯ হাজারই বাদ পড়বে।
গত শুক্রবার (২৮ জুলাই) এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার ১৪০ জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এখন একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির চেষ্টা করবে।
প্রসঙ্গত, একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে কোনো বাছাই পরীক্ষা হয় না। এসএসসি ও সমমানের ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।