আশরাফুল হক, লালমনিরহাট।। লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় একটি পরিবারকে সমাজচ্যুত করে একঘরো ঘোষনার প্রতিবাদ করায় হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে এক মাতব্বরের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (৭ জুলাই) দুপুরে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগি পরিবার। এর আগে সকালে উপজেলার সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম দৌলজোর গ্রামে এ হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত মাতব্বর ওই গ্রামের মৃত বক্তার মুন্সির ছেলে। তিনি পশ্চিম দৌলজোর মাষ্টার পাড়া জামে মসজিদের সভাপতি।
জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম দৌলজোর গ্রামের মাতব্বর সোলেমান আলীর জমির উপরে সড়কে দীর্ঘ ৩০ বছর আগে একটি ব্রীজ নির্মাণ করে সরকার। সেই ব্রীজের পানির মুখ বন্ধ করে প্রতিবেশি মুদিদোকানদার মিজানুর রহমানের জমির উপর দিয়ে পানি নিস্কাশনের চেষ্টা করেন মাতব্বর সোলেমান আলী। এতে বাঁধা দিলে তার পরিবারকে সমাজচ্যুত ঘোষনা করেন পশ্চিম দৌলজোর মাষ্টারপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি মাতব্বর সোলেমান আলী। ওই সমাজের একটি বিয়েতে মিজানুরের পরিবারকে দাওয়া দেয়া হয়। যা শুনে মাতব্বর ওই বিয়ের দাওয়াতে না যেতে সমাজের সবাইকে নিষেধ করেন। অবশেষে নিরুপায় হয়ে বিয়ের দাওয়াতে ওই পরিবারকে না যেতে দাওয়াত ফেরত নেন বিয়ে বাড়ির পরিবার। ফলে সমাজচ্যুতির বিষয়টি ব্যাপক জানাজানি হয়। একঘরো হয়ে পড়ে মিজানুরের পরিবার।
শুক্রবার সকালে সমাজচ্যুতির কারন জানতে চাইলে মিজানুরের ভগ্নপতি হায়দার আলীকে বেধম মারপিট ও তার বাড়ি ঘর মুদির দোকান ভাংচুর করে তাদেরকে নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখে মাতব্বর সোলেমান আলী ও তার লোকজন। পরে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরের ফোনে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে আহতদের আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় বিচার চেয়ে মাতব্বর সোলেমানসহ ৬ জনের জনের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মুদি দোকানদার মিজানুর রহমান।
পশ্চিম দৌলজোর মাষ্টারপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মশিউর রহমান বলেন, সমাজচ্যুত করার বিষয়টি আমি জানি না। মসজিদ কমিটি এ সমাজ পরিচালনা করেন।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মাতব্বর সোলেমান আলী বলেন, মিজানুরের মা বোন স্ত্রীরা সমাজের কারও কথা মানে না। বেপরোয়া জীবন যাপন করে। তাই সমাজের লোকজন সবাই বৈঠক করে তাদের সমাজ্যুচত করে এক ঘরো করা হয়েছে। একঘরো করায় তারা আমাকে মারধর করেছে। এ খবরে সমাজের সবাই মিলে তাদের বাড়িতে হামলা করেছে। আমি ভাংচুর করেনি। আমি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।
আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।