রোমান খন্দকার।। প্রথমেই আমরা জেনে নেই আদা-পানিতে কত গুণ। আদা মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হলেও ভিন্নভাবে আদা খাওয়ার রয়েছে নানা উপকারিতা। নিয়মিত আদা-পানি পানে অনেক সুফল পাওয়া যায়। গরম পানিতে আদার টুকরা দিয়ে ফুটিয়ে ছেঁকে নিন। চাইলে লেবুর রস ও মধু মেশাতে পারেন। এটি নিয়মিত পান করলে দূরে থাকতে পারবেন বিভিন্ন রোগ থেকে। আসুন জেনে নেই আদা-পানি আপনার কি উপকারে লাগে।
হজমের গণ্ডগোল দূর করতে প্রতিদিন পান করুন আদা-পানি। এক গ্লাস আদামিশ্রিত পানিতে ২ চা চামচ পুদিনার রস, লেবুর রস ও ১ টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে পান করুন। এটি মর্নিং সিকনেস দূর করবে।
আদা ও লেবু মিশ্রিত পানিতে রয়েছে জিঙ্ক যা নিয়মিত পান করলে ডায়াবেটিকের ঝুঁকি কমে।
আদামিশ্রিত পানি মেদ দূর করতে সাহায্য করে।
আদায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক ও চুলের জৌলুস বাড়ায়।
ঠাণ্ডা লাগা ও কাশিতে কুসুম গরম আদা-পানি পান করতে পারেন।
এখন আমরা জানবো আদা-পানি পান করবেন কেন?
প্রবাদ আছে ‘‘সকালে উঠে নুন আর আদা, অরুচি থাকে না দাদা’’। গরম পানিতে আদার টুকরা দিয়ে ফুটিয়ে ছেঁকে নিন। চাইলে লেবুর রস ও মধু মেশাতে পারেন। এটি নিয়মিত পান করলে দূরে থাকতে পারবেন নানা রোগ থেকে। আসুন জেনে নেই আদা-পানি পান করার সুফল সম্পর্কে-
হজমের গণ্ডগোল দূর করতে প্রতিদিন পান করুন আদা-পানি। এক গ্লাস আদামিশ্রিত পানিতে ২ চা চামচ পুদিনার রস, লেবুর রস ও ১ টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে পান করুন। এটি মর্নিং সিকনেস দূর করবে।
আদা ও লেবু মিশ্রিত পানিতে রয়েছে জিঙ্ক যা নিয়মিত পান করলে ডায়াবেটিকের ঝুঁকি কমে।
আদামিশ্রিত পানি মেদ দূর করতে সাহায্য করে।
আদায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক ও চুলের জৌলুস বাড়ায়।
ঠাণ্ডা লাগা ও কাশিতে কুসুম গরম আদা-পানি পান করতে পারেন।
এছাড়াও আদার আছে অনেক গুণ
নানা রোগ-ব্যাধিতে মুঠো মুঠো ওষুধ খাচ্ছেন; বিপদ বরং বাড়ছে, কমছে না! আথচ হাতের কাছেই রয়েছে মহৌষধ। সেটি হলো, কাঁচা আদা। একটুকরো কাঁচা আদা হাজারো রোগ-ব্যাধির মুক্তিদাতা। জ্বর, ঠাণ্ডা লাগা, সর্দি, কাশি, খাওয়ার অনিচ্ছা থেকে শুরু করে `হাত-পায়ে জোড়ায় ব্যথা`- সব কিছু থেকেই মুক্তি দেয় কাঁচা আদা। এক টুকরা কাঁচা আদাই যেন শরীরের রোগজীবাণু বেঁধে ফেলে। আসুন জেনে নেয়া যাক আদার আরও কিছু গুণাগুণ সম্পর্কে-
পেটের পীড়ায়
পেটের অস্বস্তি বা পীড়ায় আদা একটি আদর্শ পথ্য। হজমে সহায়তার পাশাপাশি খাবারের গুণাগুণ শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে দিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখে আদা। কিছু খাওয়ার পর পেটব্যথায় ভোগার সমস্যা হলে তা দূর করে আদার রস। পেটে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও প্রতিরোধ করে এটি।
ফুসফুসের জন্য উপকারী
ফুসফুসের সাধারণ যে কোন সংক্রমণ বা রোগের ক্ষেত্রে আদা বেশ কার্যকরী। সর্দি- কাশি, শ্বাস- প্রশ্বাসের সাধারণ সমস্যা দূর করে আদা। গলা ও স্বরতন্ত্রী পরিষ্কার রাখে।
১০০ গ্রাম আদায় আছে ৮০ ক্যালরি শক্তি, কার্বোহাইড্রেট ১৭ গ্রাম, ফ্যাট ০.৭৫ গ্রাম, পটাশিয়াম ৪১৫ মিলিগ্রাম এবং ৩৪ মিলিগ্রাম ফসফরাস।
ব্যথানাশক
অসটিও আর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে শরীরের প্রায় প্রতিটি হাড়ের জোড়ায় প্রচুর ব্যথা হয়। এই ব্যাথা দূর করে আদা। তবে রান্না করার চেয়ে কাঁচা আদা এক্ষেত্রে বেশি কার্যকরী, এতে আদার পুষ্টিগুণও বেশি থাকে। শরীরের যেকোন ধরনের ব্যথাতে আদা টনিকের মতো কাজ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আদা। এক গবেষণায় দেখা গেছে, আদার রস দাঁতের মাড়িকে শক্ত করে, দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা লুকানো জীবাণুকে ধ্বংস করে।
ক্ষত শুকাতে
দেহের কোথাও ক্ষত থাকলে তা দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে আদা। এতে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি, যা কাটাছেঁড়া, ক্ষত দ্রুত ভালো করে।
হার্ট ভালো রাখে
রক্তের অনুচক্রিকা এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতে আদা খুবই কার্যকর।
মাইগ্রেন, ডায়াবেটিস ইত্যাদিতে
মাইগ্রেনের ব্যথা ও ডায়াবেটিসজনিত কিডনির জটিলতা দূর করে আদা। গর্ভবতী মায়েদের সকাল বেলা, বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম দিকে শরীর খারাপ লাগে। কাঁচা আদা দূর করে এ সমস্যা।
রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে
পরিমিত আদা খাওয়ার অভ্যাসে শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়। আদায় রয়েছে ক্রোমিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক। এসব উপাদান রক্ত প্রবাহের প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে।
বমিভাব দূর করে
যানবাহনে চড়ার সময় কেউ কেউ অস্বস্তিতে ভোগেন বা কিছুক্ষণ গাড়িতে থাকার পর বমি চলে আসে। বমি বমি ভাব দূর করতে আদার ভূমিকা অপরিহার্য। বমি ভাব হলে কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন। এটি তাৎক্ষণিক উপকার মেলে। আর এতে মুখের স্বাদও বাড়ে।
ঠাণ্ডা-জ্বরে আদা
ঠাণ্ডা লাগা ও ভাইরাস জ্বর প্রতিরোধে আদা বিশেষ ভূমিকা রাখে। আদার রস একটু গরম করে সমপরিমান মধুর সাথে মিশিয়ে দিনে কয়েকবার খেলে ঠাণ্ডা লাগা ও ভাইরাস জ্বর সেরে যায়।
শ্বাসকষ্ট সারাতে আদা-মধু একসঙ্গে
আমরা রোজ কোনো না কোনো শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হই। যার মধ্যে কিছু নিতান্তই সাধারণ রোগ রয়েছে যা আমাদেরকে ভবিষ্যতে নানা শারীরিক ঝুঁকির সম্মুখিন করে। তবে এই ধরণের ছোট খাটো সমস্যা থেকে শুরু করে বড় বড় রোগকে সমূলে উৎপাটন করতে পারে একমাত্র প্রাকৃতিক কিছু উপাদান। প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে আদা এবং মধু খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আদা এবং মধু একসঙ্গে খেলে রক্ত সঞ্চালনজনিত সমস্যা দূর হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করে এবং ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখে। আসলে আদা এবং মধুর মধ্যে আলাদাভাবে হাজারো ভেষজ গুণ রয়েছে।
আদা এবং মধু খাওয়ার সবথেকে ভাল উপায় হল, এক চা চামচ আদার রস এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে তারপর খাওয়া। নিম্নে আদা ও মধুর একত্রে খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা উল্লেখ করা হলো।
১) শ্বাসকষ্ট সারাতে সাহায্য করে
মধুর সঙ্গে নিয়ম করে আদা এবং গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে শ্বাসকষ্ট দূর হয়ে যায়। এই মিশ্রণ নিয়মিত খেলে প্রহাদজনিত সমস্যা এবং দুশ্চিন্তা যেমন দূর হয়, তেমনই ফুসফুসে বেশি পরিমাণে অক্সিজেন পৌছাতে পারে।
২) শ্বাস প্রশ্বাস পদ্ধতিতে উন্নতি ঘটায়
সর্দি, কাশি হলে বা বুকে সর্দি বসে অনেক সময় শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। আবার অনেক সময় সর্দি লেগে নাক দিয়ে পানি পড়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে শ্বাস নেওয়া মুশকিল হয়ে পরে। এই রকম সমস্যায় মধুর সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেলে দ্রুত কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৩) বমি হওয়ার সম্ভাবনা দূর করে
মধুর সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেলে বমিভাব বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও, ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা কেমোথেরাপির পর অনেকেই বমি করেন। তাঁদের জন্যও এই ঘরোয়া পদ্ধতি খুবই কার্যকরী ভূমিকা নেয়।
৪) ক্যান্সার রোধ করে
মধুর সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেলে তা ক্যান্সার রোধ করতে পারে। কারণ এই দুই উপাদানের মধ্যেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বের করে দেয় এবং ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমিয়ে দেয়।
৫) হজমে সাহায্য করে
আদা খুব সহজেই খাদ্য হজম করাতে পারে। তাই তো নিয়মিত আদার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে হজম সংক্রান্ত নানা সমস্যা দূর হয়। সেই সঙ্গে পেট সংক্রান্ত অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৬) হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে
ধমনীর চাপ দূর করে আমাদের হৃদ যত্নের কর্মক্ষমতা বাড়াতে দারুণভাবে কাজে আসে আদা এবং মধু। শুধু তাই নয়, রক্ত চাপ স্বাভাবিক রাখতে এবং রক্তনালীর সমস্যা দূর করতে এবং হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমাতেও এই দুই প্রকৃতিক উপাদানের কোনও বিকল্প নেই।
৭) ঋতুস্রাবের ব্যাথা দূর করে
ঋতুস্রাবকালীন ব্যাথা নারীদের কাছে খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। এই ধরণের ব্যাথা খুব কষ্টকর। তাই এ ধরণের ব্যাথা নির্মূল করতে আদা এবং মধুর মিশ্রণ খাওয়া জরুরি।
৮) মাথা ব্যাথা ও যন্ত্রণা দূর করে
মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনের সমস্যা কম বেশি সবারেই রয়েছে ।এ সমস্যা থেকে বেঁচে থাকতে হলে আদা ও মধুর মিশ্রণ খাওয়া খুবই কার্যকরী।তাই মাথা যন্ত্রণ ও মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে বেঁচে থাকতে এ ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন ।
৯) স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা কমায়
রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার কারণে স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। আর এক্ষেত্রে মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।তাই এ থেকে সাবধান হাওয়াটা খুব জরুরি। নিয়মিত আদা এবং মধু খাওয়া শুরু করুন। কারণ এই দুটি উপাদান রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রোকের আশঙ্কা দূর হয়।
১০) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
আদা এবং মধুর মিশ্রণ আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। কারণ এই মিশ্রন শ্বেতরক্ত কণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে তোলে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।
শীতের সর্দি-জ্বর সারাবে আদা-রসুনের স্যুপ
শীত শুরু হতেই হাজির হয় জ্বর, সর্দি, অ্যাজমা, গলা ব্যথা ও ইনফেকশন। এই সময় সর্দি, জ্বর দূরে রাখতে আদা, রসুনের বিকল্প নেই। পুরনো সেই আদা, রসুনের মিশ্রনে তৈরি স্যুপের উপর ভরসা রাখতে পারেন আপনিও। শুধু জ্বর হলেই নয়, সারা শীতকালেই খেতে পারেন এই স্যুপ।
বলা হয় রসুনের থেকে ভালো ওষুধ আর হয় না। রসুনের গুণাগুণ অনেক। ভাইরাল ফিভার, ঠাণ্ডা লাগার মতো অসুখের প্রতিরোধ করতে রসুন খুব উপকারী। শুধু ঠান্ডার জন্যই নয়, রসুন যেকোনো অ্যালার্জি, গলা ব্যথা, ফুসফুসের ইনফেকশনের মতো সমস্যা নিমিষে সারিয়ে তোলে। এছাড়া উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কোলেস্টেরল, হার্ট অ্যাটাক এবং স্টোক প্রতিরোধেও রসুন খুব কাজে দেয়।
অন্যদিকে রসুনের মতোই আদাও খুবই উপকারী একটি ঘরোয়া উপাদান। বহু যুগ ধরেই সর্দি, জ্বর, পেটের সমস্যা সারাতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে আদা। অনেক রকমের রোগ প্রতিরোধ করতে আদা খুব উপকারী। জ্বর কমাতে এক কাপ আদার রসে মধু মিশিয়েও খেতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গেই ফল পাবেন।
ফলে এই রসুন আর আদা যখন আপনি একসঙ্গে সেবন করবেন তখন তা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুণে বাড়িয়ে দিবে। এবং আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমেই একটা ব়ড় বাটিতে পেঁয়াজ, রসুন, আদা সব কিছু নিয়ে ২ মিনিট হালকা আঁচে নেড়ে নিন। এর মধ্যে স্টক বা ব্রোথ দিয়ে আঁচ কম রেখেই আদা, রসুন, পেঁয়াজ নরম না হওয় পর্যন্ত ফোটাতে থাকুন। উপরে চিলি পেপার কুচি ছড়িয়ে মিনিট পাঁচেক ঢিমে আঁচে রেখে নামিয়ে নিন। যদি বেশি মশলা পছন্দ না হয় তা হলে লঙ্কা গুঁড়োর বদলে ছড়িয়ে নিতে পারেন দারচিনি গুঁড়ো। আরও বেশি স্বাস্থ্যকর করে তুলতে মেশাতে পারেন গাজর এবঙ বিট।
আমাশয়ের চিকিৎসায় আদা
আদার রয়েছে অনেক গুণ। নানাবিধ অসুখ থেকে আরোগ্য লাভ করার সুয়োগ রয়েছে এর মাধ্যমে। আদার গুণাবলি তুলে ধরেছেন ড. তপন কুমার দে তার ‘বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় গাছ-গাছড়ার’ বইয়ে। একুশে টেলিভিশন অনলাইনের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো-
১) অতিসারে- পাতলা এবং ঘনঘন পায়খানা হচ্ছে? প্রথমে আমলকি বেটে নাড়ির চারদিকে পুরু করে প্রলেপ দিতে হবে, এরপর আদার রসে পাতলা কাপড় ভিজিয়ে আমলকির প্রলেপের ওপর চাপা দেওয়া দরকার। আদার রসে ভেজানো কাপড় শুকিয়ে গেলে পুনরায় আদার রসে ভিজিয়ে নিতে হবে। দ্রুত ফললাভের জন্য এক চামচ পরিমাণ আদার রস অল্প ঠাণ্ডা পানিতে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। অতিসার রোগের এ চিকিৎসা অনেক দিনের পুরনো
২) পুরানো আমাশয়- বহুদিনের আমাশয়ে যারা ভুগছেন, কিছুতেই সারছে না, এক্ষেত্রে আদাকে শুকিয়ে গুঁড়ো করে, এক গ্রাম পরিমাণ গুঁড়ো হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। তবে নিয়মিত খাওয়া দরকার। এতে আম পরিপাক হবে এবং আমাশয় কমে যাবে।
৩) মাড়ি ফুলে গেলে -দাঁতের গোড়ায় যন্ত্রণা এবং মাড়ি ফুলে গেলে, আধা কাপ হালকা গরম পানিতে দুচামচ কাঁচা আদার রস মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট মুখে রাখতে হবে। দিনে দুবার করে তিন দিন প্রয়োগ করলে মাড়ি ফূলা এবং যন্ত্রণা দুই-ই কমবে
৪) পেটে বায়ু জমলে অনেক সময় সে বায়ু ওপরদিকে উঠে আসে ফলে বুকে যন্ত্রণা বা অবিরাম হিক্কা হতে থাকে। আধা কাপ পারিমাণ ছাগলের দুধের সঙ্গে আধা চামচ আদার রস মিশিয়ে খেলে হিক্কা কমে যাবে।
৫) রক্তপাত বন্ধ করতে হবে- শরীরের কোথাও অনেকটা কেটে গেলে কিংবা রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে না, এ সময় খানিকটা শুকানো আদার গুড়ো নিয়ে কাটা স্থানে চেপে ধরলে রক্তপাত বন্ধ হবে এবং কাটা স্থানটি তাড়াতাড়ি জোড়া লাগতে সাহার্য করবে।
৬) আমবাত - শরীরে চাকা চাকা দাগ হয় এবং লাল হয়ে ফুলে ওঠে, এক বছর বা আগে তৈরি দুচামচ পরিমণ আখের গুড়ের সঙ্গে এক চামচ আদার রস মিশিয়ে খেলে আমবাত কমে যাবে। তবে ওষুধ খেয়েও পায়খানা পরিস্কার না হলে আমবাত কমবে না। কাজেই একে নির্মূল করতে পেট পরিস্কার করার ওষুধ খাওয়া দরকার।
৭) সর্দি জ্বর- হঠাৎ সর্দি হয়েছে নাক দিয়ে পানি পড়ছে কিংবা অল্প অল্প শীত করছে জ্বর ভাব রয়েছে সেক্ষেত্রে দুই চামচ মধুর সঙ্গে এক চামচ আদার রস মিশিয়ে দিনে দুবার দুই দিন খেলে অবশ্যই উপকার হবে।
৮) বসন্ত রোগে- বসন্তের গুটি বের হচ্ছে না, গুটি তাড়াতাড়ি বের হওয়া দরকার, এ অবস্থায় আদা খুবই ফলদায়ক। এক চামচ কাঁচা আদার রসের সঙ্গে সমপরিমাণ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খেলে গুটি তারাতারি বেরিয়ে যাবে।
৯) ক্ষিদে বাড়াতে- কিছুই খেতে ইচ্ছে হয় না, অর্থাৎ ক্ষুধা মন্দা এবং খুখে অরুচি, দুপুরে খাবার আগে সৈন্ধব লবন দিয়ে একটু আদা খেতে হবে। এতে ক্ষিধে বাড়বে এবং মুখের রুচিও ফিরে আসবে।
১০) পাকস্থলী ও হজমশক্তি বৃদ্ধিতে- দুই থেকে তিন গ্রাম পরিমাণ কাঁচা আদার সঙ্গে সামান্য পরিমাণ বিট লবন মিশিয়ে আহারের পর দিনে দুবার সেব্য। ১৫-২০ দিন নিয়মিত সেবন করে যাওয়া আবশ্যক।
১১) কাশি ও স্বর পরিস্কারে- আদার রস এক চা চামচ, তুলসি পাতার রস এক চামচ, মধু দুই চামচ একত্রে মিশিয়ে প্রত্যহ দুই থেকে তিন বার সেব্য। সাত থেকে ১০ দিন সেবন করে যাওয়া আবশ্যক।
১২) কর্ণবেদনায় আদার রস তিন থেকে চার ফোঁটা ঈষৎ গরম করে প্রত্যহ দুই থেকে তিন বার কর্ণে প্রয়োগ করলে বিশেষ উপকার হবে। দুই থেকে চার দিন নিয়মিত কর্ণে প্রয়োগ করে যেতে হবে।
পরিচিতি- আদা একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। গাছ ১মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে থাকে। এর পাতাগুলো সুন্দরভাবে সাজানো এবং সুবিন্যস্ত। পাতা ৩০-৩৫ সেন্টি মিটার লম্বাকৃতি এবং গাঢ় সবুজ বর্ণের । গাছের কন্দ বা মূল প্রাচীনকাল থেকে দৈনন্দিন রান্নার কাজে এবং বিভিন্ন ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে আসছে। আদার স্বাদ তীব্র ঝাল। আদাকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে নেওয়া হয় যাবে আমারা শুঁট বা শুটি বলে থাকি।
চুলে আদা ব্যবহারে মিলবে ৭ উপকার
চুলের সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি স্কাল্পের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে আদার কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির ভেতরে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান চুলের গোড়ায় পুষ্টির ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি চুলকে এতটাই শক্তপোক্ত করে তোলে যে নানাবিধ উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন-
হেয়ার ফলের মাত্রা কমে
মাত্রারিক্ত চুল পড়ছে নাকি? তাহলে চুলের পরিচর্যায় আজ থেকেই কাজে লাগাতে শুরু করুন আদাকে। দেখবেন হেয়ার ফলের মাত্রা তো কমবেই, সেই সঙ্গে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে চোখে পরার মতো। আসলে আদার ভেতরে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং আরও নানাবিধ উপকারি উপাদান হেয়ার ফলিকেলের ভেতরে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চুল এতটাই শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে যে হেয়ার ফলের আশঙ্কা কমে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে ১ চামচ আদার পেস্ট নিয়ে তার সঙ্গে ১ চামচ অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল মিশিয়ে সেই মিশ্রনটি স্কাল্পে লাগিয়ে ধীরে ধীরে মাসাজ করতে হবে। এরপর ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে চুলটা। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে দুবার এইভাবে চুলের পরিচর্যা করলেই কেল্লা ফতে!
খুশকির প্রকোপ কমে
আদায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ, যা স্কাল্পে সংক্রমণের মাত্রা কমানের পাশাপাশি হারিয়ে যাওয়া আদ্রতাকেও ফিরিয়ে আনে। ফলে খুশকির সমস্যা কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে স্কাল্পে কোনও ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। এখন প্রশ্ন হল এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে কাজে লাগাতে হবে আদাকে? এক্ষেত্রে ২ চামচ আদার পেস্ট নিয়ে তাতে ৩ চামচ তিল তেল এবং হাফ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে তারপর সেই পেস্টটি ভার করে স্কাল্পে এবং চুলে লাগিয়ে ৩০ অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ধুয়ে ফলতে হবে চুলটা। সপ্তাহে কম করে দুবার এই পেস্টটিকে কাজে লাগালে দেখবেন খুশিকর মতো ত্বকের রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।
চুলকে আদ্র রাখে
পরিবেশ দূষণের মাত্রা বাড়ার কারণে চুলের বারোটা বাজে। বিশেষত চুলের ভেতরে আদ্রতা কমে যাওয়ার কারণে চুল হয়ে যাচ্ছে রুক্ষ। আর একথা তো সবারই জানা আছে রুক্ষ চুলের আয়ু বেশি দিন হয় না। ফলে মাথা ফাঁকা হয়ে যেতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এমন পরিস্থিতির শিকার কি আপনিও হয়েছেন? তাহলে সপ্তাহে কম করে ২-৩ তিন আদার পেস্ট চুলে লাগাতে শুরু করুন। এমনটা করলে দেখবেন স্কাল্প এবং চুলের ভেতরে আদ্রতা বাড়তে শুরু করেছে। ফলে চুল পড়ার হার তো কমবেই, সেই সঙ্গে চুলের সৌন্দর্যতাও বৃদ্ধি পাবে চোখে পরার মতো।
চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে, আদার ভেতরে থাকা জিঞ্জেরল নামক উপাদানটি স্কাল্পের ভেতরে প্রবেশ করার পর চুলের গোড়ায় রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। আর এমনটা হলে চুল সুন্দর হয়ে উঠতে যে সময় লাগে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে! প্রসঙ্গত, সপ্তাহে কম করে ৩-৪ দিন আদার পেস্ট চুলের গোড়ায় লাগাতে হবে, তাহলেই দেখবেন উপকার মিলবে একেবারে হাতে-নাতে!
চুল উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে
আদার ভেতরে উপস্থিত একাধিক উপকারি ফ্যাটি অ্যাসিড, যেমন লাইনোলিক অ্যাসিড, চুলকে যেমন শক্তপোক্ত করে, তেমনি পুষ্টির ঘাটতি দূর করার মধ্যে দিয়ে চুলকে উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত করে তুলতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে ১ চামচ আদার পেস্টের সঙ্গে হাফ কাপ শসা, ১ চামচ নারকেল তেল এবং ১ চামচ তুলসি তেল মিশিয়ে বানানো পেস্ট, সপ্তাহে ২-৩ বার চুলে লাগাতে হবে, তাহলেই কেল্লা ফতে!
চুলের গ্রাথ বাড়াতে কাজে আসে
২ চামচ আদার পেস্টের সঙ্গে পরিমাণ মতো পেঁয়াজের পেস্ট মিশিয়ে নিয়ে তা যদি নিয়মিত চুলে লাগানো যায়, তাহলে স্কাল্পের ভেতরে সালফারের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে আরও নানা সব উপকারি উপাদানের ঘাটতিও দূর হয়। ফলে চুলর গ্রোথ দারুনভাবে হতে থাকে। তাই তো বলি, অল্প বয়সেই যদি মাথা ফাঁকা হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে এই ঘরোয়া টোটকাটিতে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন!
আদা এবং রসুনের পেস্ট
জিভে পানি আনা নানাবিধ নিরামিষ বাঙালি পদ বানাতে কাজে আসা আদা এবং রসুনের পেস্টকে কাজে লাগিয়ে বাস্তবিকই চুলের পরিচর্যা করা সম্ভব। আসলে এই দুটি উপাদানের ভেতরে থাকা সালফার এবং আরও সব উপকারি উপাদান একদিকে যেমন হেয়ার গ্রোথকে ত্বরান্বিত করে, তেমনি হেয়ার ড্যামেজের চিকিৎসা করার মধ্যে দিয়ে চুলের সৌন্দর্য বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখন প্রশ্ন হল, আদা এবং রসুনের পেস্টকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে বানাতে হবে হেয়ার মাস্ক? এক্ষেত্রে ১ চামচ আদার পেস্টের সঙ্গে ২ চামচ মধু, ২ চামচ নারকেল তেল এবং ৩ টে রসুনের কোয়া ফেলে ভাল করে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর মিশ্রনটি চুলে লাগিয়ে কম করে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে শ্যাম্পু দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে চুলটা।
হলুদ-আদা চায়ের অসাধারণ ৭ গুণ
হলুদ-আদা চা শরীর চাঙ্গা রাখা থেকে শুরু করে অনেক রোগ উপশমে কার্যকর। এতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, কপার এবং জিঙ্কের মতো খনিজ পদার্থ। এ পদার্থগুলো হজম, ডায়াবেটিস, হাই কোলেস্টেরল, মানসিক ও ওজনের সমস্যা সমাধানসহ ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক হলুদ-আদা চায়ের অসাধারণ ৮ গুণ-
১) হার্ট ভাল রাখে
বেশ কয়েকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে আদা এবং হলুদের মধ্যে উপকারি বেশ কিছু উপাদান রয়েছে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিক রাখে। ফলে রক্তের প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে। এর ফলে হার্টের সমস্যা দূর হয়।
২) মনোসংযোগ বৃদ্ধিতে
আদা মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধিতে দারুণ কার্যকরী। আর হলুদ এবং আদা দিয়ে তৈরি এই চায়ে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় স্নায়ুর কাজে সম্পন্ন করে। এর ফলে, মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ মস্তিষ্কের টিস্যুকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। ফলে মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপ পরে না।
৩) হজমে শক্তি বৃদ্ধিতে
আদার মধ্যে প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করার উপাদান রয়েছে, যা পেট ভাল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও, বমিভাব দূর করতে পারে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এটি পেট ব্যাথা, পেট ফুলে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও দারুণ কাজ করে।
৪) ডায়াবেটিস প্রতিরোধে
হলুদ-আদা চা ডায়াবেটিস রোগ দূর করতে দারুণ কাজে দেয়। এই চা পান করলে এর দুর্লভ উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে, ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা দূর হয়। একই সঙ্গে ইনসুলিন এবং গ্লকোজের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
৫)রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে
হলুদ এবং আদা-এই দুই উপকরণ জীবাণুনাশক এবং সংক্রমণবিরোধী হওয়ায় এটি আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও ঠাণ্ডা লাগা, সর্দি, কাশি, গলা ব্যাথার মতো সমস্যাগুলোকেও দূর করতে পারে।
৬) ওজন কমাতে
ওজন কমানোর যাবতীয় গুণাগুণ রয়েছে হলুদে। আদা-হলুদ শরীরে মেদ জমতে দেয় না। খাবার হজম করতে সাহায্য করে। স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৭) ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে
হলুদ ত্বকের যত্নে দারুণ কাজ দেয়। ব্রণ ও দাগের ছোপ দূর করতেও কাজ করে এটি। এছাড়াও ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। হলুদ-আদা চায়ের মধ্যে জীবাণুনাশক উপাদান থাকায় এটি ত্বককে যে কোনও রকম সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এছাড়াও,ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করে এবং ত্বককে সজীব রাখে।
যেভাবে তৈরি করবেন হলুদ-আদা চা-
একটি পাত্রে এক কাপ পানি নিয়ে গরম করুন। পানি গরম হয়ে এলে তাতে এক চিমটে আদা বাটা এবং এক চিমটে হলুদ বা হলুদ বাটা দিন। পানি ফুটে এলে গ্যাস বন্ধ করে দিন। ঠাণ্ডা হতে দিন। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এলে। ছাকনি দিয়ে কাপে ছেঁকে নিন। তৈরি আপনার আদা-হলুদ চা। স্বাদ বাড়াতে এক চা চামচ মধু অথবা লেবুর রস বা এক চা চামচ গোলমরিচ মেশাতে পারেন।
রোগের প্রতিষেধক হিসেবে আদা
রোগের প্রতিষেধক হিসেবে প্রকৃতির ভান্ডারে যে যে অস্ত্র আছে, তার বেশির ভাগই উপস্থিত রয়েছে আদার মধ্যে।তাই তো শুধু আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরাই নয়, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে যারা চর্চা করেন, তারাও নিয়মিত আদা খাওয়া পরামর্শ দিচ্ছেন।
আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ডায়াটারি ফাইবার, প্রোটিন, সোডিয়াম, আয়রন এবং ভিটামনি সি, সেই সঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু অ্যাকটিভ ইনগ্রিডিয়েন্টস, যেমন ধরুন-জিঞ্জোরেল, শোগাওল, জিঞ্জেরন এবং টার্পেনোডিস, যা নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে।
১. যে কোনও ধরনের যন্ত্রণা কমায়: একেবারেই ঠিক শুনেছেন বন্ধু! বাস্তবিকই ব্যথা কমাতে আদার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির অন্দরে উপস্থিত একাধিক ইনফ্লেমেটরি উপাদান, শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে শরীরের মধ্যে ইনফ্লেমেশন হ্রাস পায়। আর এমনটা হলে ব্যথার প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না।
২. হেয়ার ফলের মাত্রা কমে: মাত্রারিক্ত চুল পড়ছে নাকি? তাহলে বন্ধু চুলের পরিচর্যায় আজ থেকেই কাজে লাগাতে শুরু করুন আদাকে। দেখবেন হেয়ার ফলের মাত্রা তো কমবেই, সেই সঙ্গে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে চোখে পড়ার মতো। আসলে আদার মধ্যে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং আরও নানাবিধ উপকারি উপাদান হেয়ার ফলিকেলের মধ্যে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চুল এতটাই শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে যে হেয়ার ফলের আশঙ্কা কমে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে ১ চামচ আদার পেস্ট নিয়ে তার সঙ্গে ১ চামচ অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল মিশিয়ে সেই মিশ্রনটি স্কাল্পে লাগিয়ে ধীরে ধীরে মাসাজ করতে হবে। এরপর ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে চুলটা। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে দুবার এইভাবে চুলের পরিচর্যা করলেই সুফল মিলবে।
৩. ডায়াবেটিসের মতো মারণ রোগ দূরে থাকে: নিয়মিত অল্প পরিমাণ আদা, পরিমাণ মতো লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে পান করার অভ্যাস করলে একদিকে যেমন কিডনির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি শরীরে জিঙ্কের ঘাটতি দূর হতে শুরু করে। এই খনিজটি ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা এত মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় যে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না।
৪. খুশকির প্রকোপ কমে: আদায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ, যা স্কাল্পে সংক্রমণের মাত্রা কমানের পাশাপাশি হারিয়ে যাওয়া আদ্রতাকেও ফিরিয়ে আনে। ফলে খুশকির সমস্যা কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে স্কাল্পে কোনও ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। এখন প্রশ্ন হল এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে কাজে লাগাতে হবে আদাকে? এক্ষেত্রে ২ চামচ আদার পেস্ট নিয়ে তাতে ৩ চামচ তিল তেল এবং হাফ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে তারপর সেই পেস্টটি ভার করে স্কাল্পে এবং চুলে লাগিয়ে ৩০ অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ধুয়ে ফলতে হবে চুলটা। সপ্তাহে কম করে দুবার এই পেস্টটিকে কাজে লাগালে দেখবেন খুশিকর মতো ত্বকের রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে: অতিরিক্ত ওজনের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে উপদেশ দেব আজ থেকেই আদা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার মিলবে! আসলে আদার মধ্যে থাকা ডায়াটারি পাইবার অনেকক্ষণ পেটকে ভরিয়ে রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খিদে কমিয়ে দেয়। আর এমনটা হলে খাবার পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে অতিরিক্তি মেদ ঝরে যেতে সময় লাগে না। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
৬. চুলের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরে আসে: সম্প্রতি হওয়া একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে কলকাতা শহর এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা বাড়ার কারণে সিংহভাগেরই চুলের বারোটা বেজে গেছে। বিশেষত চুলের অন্দরে আদ্রতা কমে যাওয়ার কারণে চুল হয়ে যাচ্ছে রুক্ষ। আর একথা তো সবারই জানা আছে রুক্ষ চুলের আয়ু বেশি দিন হয় না। ফলে মাথা ফাঁকা হয়ে যেতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এমন পরিস্থিতির শিকার কি আপনিও হয়েছেন? তাহলে সপ্তাহে কম করে ২-৩ তিন আদার পেস্ট চুলে লাগাতে শুরু করুন। এমনটা করলে দেখবেন স্কাল্প এবং চুলের মধ্যে আদ্রতা বাড়তে শুরু করেছে। ফলে চুল পড়ার হার তো কমবেই, সেই সঙ্গে চুলের সৌন্দর্যতাও বৃদ্ধি পাবে চোখে পরার মতো।
৭. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: বেশ কিছু কেস স্টাডি করে দেখা গেছে নিয়মিত সকাল বেলা এক কোয়া করে আদা, সঙ্গে অল্প পরিমাণে মধু খাওয়া শুরু করলে পাকস্থলির কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে পাচক রসের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, গর্ভাবস্থায় সকাল সকাল যদি এই পানীয়টি খাওয়া যায়, তাহলে মর্নিং সিকনেসের মতো সমস্যা কমে নিমেষে।
৮. ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়: একাধিক গবেষণায় একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে আদায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং উপকারি ভিটামিন, সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যাতে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্মৃতিশক্তি বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে বুদ্ধিরও বিকাশ ঘটে চোখে পরার মতো। এবার বুঝতে পরেছেন তো নিয়মিত আদা খাওয়ার প্রয়োজন কতটা!
৯. চুলের সৌন্দর্য বাড়ে: বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে আদার অন্দরে থাকা জিঞ্জেরল নামক উপাদানটি স্কাল্পের অন্দরে প্রবেশ করার পর চুলের গোড়ায় রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। আর এমনটা হলে চুল সুন্দর হয়ে উঠতে যে সময় লাগে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে! প্রসঙ্গত, সপ্তাহে কম করে ৩-৪ দিন আদার পেস্ট চুলের গোড়ায় লাগাতে হবে, তাহলেই দেখবেন উপকার মিলবে একেবারে হাতে-নাতে!
১০. পেশীর কর্মক্ষমতা বাড়ে: সারা সপ্তাহ দৌড়-ঝাঁপ করে কাজ করতে করতে সপ্তাহান্তে আমাদের শরীরের প্রায় প্রতিটি পেশীই বেশ ক্লান্ত হয়ে পরে। এই সময় তাদের চাঙ্গা করার জন্য কি করা যেতে পারে? কিছুই নয়, এমন পরিস্থিতিতে এক গ্লাস আদা জল পান করে ফেলুন। এমনটা করলে দেখবেন নিমেষে শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠবে।
এছাড়াও আদার আছে আদার আছে আরো অনেক গুণ
নানা রোগ-ব্যাধিতে মুঠো মুঠো ওষুধ খাচ্ছেন; বিপদ বরং বাড়ছে, কমছে না! আথচ হাতের কাছেই রয়েছে মহৌষধ। সেটি হলো, কাঁচা আদা। একটুকরো কাঁচা আদা হাজারো রোগ-ব্যাধির মুক্তিদাতা। জ্বর, ঠাণ্ডা লাগা, সর্দি, কাশি, খাওয়ার অনিচ্ছা থেকে শুরু করে `হাত-পায়ে জোড়ায় ব্যথা`- সব কিছু থেকেই মুক্তি দেয় কাঁচা আদা। এক টুকরা কাঁচা আদাই যেন শরীরের রোগজীবাণু বেঁধে ফেলে। আসুন জেনে নেয়া যাক আদার আরও কিছু গুণাগুণ সম্পর্কে-
পেটের পীড়ায়
পেটের অস্বস্তি বা পীড়ায় আদা একটি আদর্শ পথ্য। হজমে সহায়তার পাশাপাশি খাবারের গুণাগুণ শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে দিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখে আদা। কিছু খাওয়ার পর পেটব্যথায় ভোগার সমস্যা হলে তা দূর করে আদার রস। পেটে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও প্রতিরোধ করে এটি।
ফুসফুসের জন্য উপকারী
ফুসফুসের সাধারণ যে কোন সংক্রমণ বা রোগের ক্ষেত্রে আদা বেশ কার্যকরী। সর্দি- কাশি, শ্বাস- প্রশ্বাসের সাধারণ সমস্যা দূর করে আদা। গলা ও স্বরতন্ত্রী পরিষ্কার রাখে।
১০০ গ্রাম আদায় আছে ৮০ ক্যালরি শক্তি, কার্বোহাইড্রেট ১৭ গ্রাম, ফ্যাট ০.৭৫ গ্রাম, পটাশিয়াম ৪১৫ মিলিগ্রাম এবং ৩৪ মিলিগ্রাম ফসফরাস।
ব্যথানাশক
অসটিও আর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে শরীরের প্রায় প্রতিটি হাড়ের জোড়ায় প্রচুর ব্যথা হয়। এই ব্যাথা দূর করে আদা। তবে রান্না করার চেয়ে কাঁচা আদা এক্ষেত্রে বেশি কার্যকরী, এতে আদার পুষ্টিগুণও বেশি থাকে। শরীরের যেকোন ধরনের ব্যথাতে আদা টনিকের মতো কাজ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় আদা। এক গবেষণায় দেখা গেছে, আদার রস দাঁতের মাড়িকে শক্ত করে, দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা লুকানো জীবাণুকে ধ্বংস করে।
ক্ষত শুকাতে
দেহের কোথাও ক্ষত থাকলে তা দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে আদা। এতে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি, যা কাটাছেঁড়া, ক্ষত দ্রুত ভালো করে।
হার্ট ভালো রাখে
রক্তের অনুচক্রিকা এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতে আদা খুবই কার্যকর।
মাইগ্রেন, ডায়াবেটিস ইত্যাদিতে
মাইগ্রেনের ব্যথা ও ডায়াবেটিসজনিত কিডনির জটিলতা দূর করে আদা। গর্ভবতী মায়েদের সকাল বেলা, বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম দিকে শরীর খারাপ লাগে। কাঁচা আদা দূর করে এ সমস্যা।
রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে
পরিমিত আদা খাওয়ার অভ্যাসে শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়। আদায় রয়েছে ক্রোমিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক। এসব উপাদান রক্ত প্রবাহের প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে।
বমিভাব দূর করে
যানবাহনে চড়ার সময় কেউ কেউ অস্বস্তিতে ভোগেন বা কিছুক্ষণ গাড়িতে থাকার পর বমি চলে আসে। বমি বমি ভাব দূর করতে আদার ভূমিকা অপরিহার্য। বমি ভাব হলে কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন। এটি তাৎক্ষণিক উপকার মেলে। আর এতে মুখের স্বাদও বাড়ে।
ঠাণ্ডা-জ্বরে আদা
ঠাণ্ডা লাগা ও ভাইরাস জ্বর প্রতিরোধে আদা বিশেষ ভূমিকা রাখে। আদার রস একটু গরম করে সমপরিমান মধুর সাথে মিশিয়ে দিনে কয়েকবার খেলে ঠাণ্ডা লাগা ও ভাইরাস জ্বর সেরে যায়।
হজমের সমস্যা ও উচ্চ রক্তচাপে কাজে লাগান আদা
নানা রোগ-ব্যাধিতে মুঠো মুঠো ওষুধ খাচ্ছেন, তবুও সমস্যা কমছে না? হজমে সমস্যা ও উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে এরকম হয়ে থাকে। আবার শীতে অনেকের বাত ব্যথা যায় বেড়ে। এসব রোগের ক্ষেত্রে ওষুধ খাওয়ার আগে কাজে লাগাতে পারেন আদা। আদায় রয়েছে এমন ঔষধিগুণ যা একাধিক রোগ-ব্যাধির মোকাবিলা করতে সক্ষম। ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছে ৮০ ক্যালরি এনার্জি, ১৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ০.৭৫ গ্রাম ফ্যাট, ৪১৫ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম আর ৩৪ মিলিগ্রাম ফসফরাস। অর্থাত্, আদা মানেই একাধিক ঔষধিগুণ সম্পন্ন একটি মসলা।
এবার আদার নানা স্বাস্থ্যগুণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক...
* প্রতিদিন সকালে এক কাপ আদা চা খেলেই দূর হবে সর্দি, কাশি, জ্বর ও গা ব্যথা। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত যে কোন সংক্রমণ ঠেকাতে আদার রস খুবই কার্যকরী।
* ওজন কমানোর ক্ষেত্রে মোক্ষম উপায় হতে পারে আদা। আদা ক্যালরি চটজলদি বার্ন করতে সক্ষম। তাছাড়া আদার রস কার্বোহাইড্রেট দ্রুত হজম করায়, মেটাবলিজম রেট বাড়ায়, ইনসুলিনের নিঃসরণ বাড়ায়। ফলে ওজন সহজেই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
* উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আদা অত্যন্ত কার্যকরী। এর জন্য প্রতিদিন ৭৫ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম আদাই যথেষ্ট।
* গরম পানির সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেলে বাতের ব্যথাও কমে। একদল মার্কিন গবেষক দাবি করেন, আর্থ্রাইটিসের মতো সমস্যাও কমে যেতে পারে আদার রসে।
* হজমের সমস্যা, বুক জ্বালা বা গ্যাস অম্বলে আদা অত্যন্ত কার্যকরী।
আর দেরি না করে আদা খাওয়া অভ্যাস করুন আর সুস্থ থাকুন। তবে গর্ভাবস্থায় আদা না খাওয়াই ভালো।
এখন আমরা জানবো আদার ১০টি বিশেষ স্বাস্থ্যগুণ
রোগ-ব্যাধির বাড়বাড়ন্তে মুঠো মুঠো ওষুধ খাচ্ছেন? তাও সমস্যা কমছে না? এবার তাহলে আদা-পানি খেয়ে লড়াইয়ে নামার সময় এসেছে। ঠাট্টা নয়, আদায় রয়েছে এমন ওষধিগুণ যা একাধিক রোগ-ব্যাধির মোকাবিলায় সাহায্য করে। ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছে ৮০ ক্যালরি এনার্জি, ১৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, শূন্য দশমিক ৭৫ গ্রাম ফ্যাট, ৪১৫ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম আর ৩৪ মিলিগ্রাম ফসফরাস। অর্থাত্, আদা মানেই একাধিক ওষধিগুণ সম্পন্ন সুষম সবজি। আসুন এবার আদার নানা স্বাস্থ্যগুণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১) হজমের সমস্যা, বুক জ্বালা বা গ্যাস অম্বলে আদা অত্যন্ত কার্যকরী।
২) শরীরের ব্যথা-বেদনার উপশমে আদার প্রভাব আশ্চর্য রকমের! আদার রসে থাকা জিঞ্জেরল কাজ করে আইবুপ্রোফেনের মতো ব্যথার ওষুধের মতোই।
৩) বছর খানেক আগে একদল মার্কিন গবেষক দাবি করেন, আর্থ্রাইটিসের মতো সমস্যাও কমে যেতে পারে আদার রসে।
৪) মিশিগান ইউনিভার্সিটির মার্কিন গবেষকদের মতে, ক্যানসারের কোষগুলোর অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি রুখে দিতে পারে আদার রস।
৫) মাইগ্রেনের সমস্যার উপশমে আদার প্রভাব আশ্চর্য রকমের! আদার অ্যান্টিহিস্টামাইন, অ্যান্টিনসিয়া উপাদান মাথা-ধরার অস্বস্তি থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে সক্ষম।
৬) ওজন কমানোর ক্ষেত্রে মোক্ষম দাওয়াই হতে পারে আদা। আদা ক্যালরি চটজলদি বার্ন করতে সক্ষম। তাছাড়া, আদার রস কার্বোহাইড্রেট দ্রুত হজম করায়, মেটাবলিজম রেট বাড়ায়, ইনসুলিনের নিঃসরণ বাড়ায়। ফলে ওজন সহজেই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৭) উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আদা অত্যন্ত কার্যকরী। এর জন্য প্রতিদিন ৭৫ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম আদাই যথেষ্ট।
৮) ঠাণ্ডা-গরমে খুসখুসে কাশি বা সর্দির সমস্যায় আদার রস খুবই কার্যকরী। খুসখুসে কাশিতে গলার ভেতরের অস্বস্তি কমাতে আদার জুড়ি মেলা ভার।
৯) একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত যে কোনও সংক্রমণ ঠেকাতে আদার রস খুবই কার্যকরী।
১০) বমি বমি ভাব, শারীরিক অবসাদ কমাতে আদার কুচি মুখে রাখলে উপকার পাওয়া যায়।
আদার যেসব উপকার আপনকে অবাক করবে
আদা বহু গুণের জন্য পরিচিত। রান্নার মশলার উপকরণের মধ্যে অন্যতম হলো আদা। খাবার-দাবারে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয় এই আদা। তেমনিভাবে কিছু শুশ্রূষার ক্ষেত্রেও আদি যুগ থেকে ঘরোয়াভাবে আদা ব্যবহার করা হচ্ছে।
অনেকেই চায়ে আদা খান আবার সর্দি-কাশিতে লবণের সঙ্গে খালি খালি খেয়েও থাকেন। কিন্তু এই আদার সঙ্গে পানি মিলিয়ে খেলে বিভিন্ন ভাবে উপকার পাওয়া সম্ভব।
এবার জেনে নিন পানির সঙ্গে আদা খেলে কি কি উপকার আসে :
* বদহজমে কেবল আদা নয়, আদা দিয়ে ফোটানো পানি খুব উপকারে আসে। আদা-পানি খাবারকে সহজপাচ্য করে হজমশক্তি বাড়িয়ে শরীরকে সুস্থ করে তোলে। সামান্য অনিয়ম হলেও তার সঙ্গে লড়ার শক্তি বাড়িয়ে দেয়।
* জিম সেরে এসে বা শরীরচর্চা, অতিরিক্ত শ্রমের পর পেশীতে টান বা ব্যথা হলে আদা ফুটিয়ে সেই পানি ছেঁকে খাবেন। দিন কয়েক খাওয়ার পর পেশীতে ব্যথার এই প্রবণতা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।
* ঠান্ডা লেগে গলা ভেঙে গেলে, কাশিতে গলা খুশ খুশ করলে আদা কুচিয়ে পানিতে ফেলে দিন। উষ্ণ সেই পানি পান করুন দিনে দুই থেকে তিন বার। ঠাণ্ডাজনিত প্রদাহ কমিয়ে গলাকে আরাম দিতে অতি কার্যকর এই প্রক্রিয়া।
* শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে আদা-পানি যা গ্রিন টির মতোই কার্যকর।
* আদার সঙ্গে পানি, মধু ও লেবু মিশিয়ে খেলে মেদ ঝরবে দ্রুত।
* সারাদিন এনার্জি ধরে রাখতে সকালে চা না খেয়ে গরম পানিতে আদা ও মধু মিশিয়ে খান। উপকার হাতেনাতে টের পাবেন।
* আগের দিন রাতে জিরা ও আদার কুচি পানিতে মিশিয়ে রেখে দিন, পরের দিন সকালে সেই পানি ছেঁকে ফুটিয়ে খান। মেদ ঝরিয়ে শরীর ঝরঝরে করবে খুব তাড়াতাড়ি।
* রান্না করার চেয়ে কাঁচা আদার পুষ্টিগুণ বেশি৷ আদাপানির মাধ্যমে বহু রোগের জীবাণু ধ্বংস হয়৷ ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও আদার জুড়ি নেই৷
* অস্ট্রেলিয়ায় এক গবেষণায় দেখা গেছে, আদা শরীরের রক্তজমাট দূর করতে সাহায্য করে। রক্তের জীবাণু দূর করতেও এটি ওষুধ হিসেবে কাজ করে।