ডেস্ক রিপোর্ট:: হিন্দু সম্প্রদায়ের আরাধ্য ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী আজ। শ্রীকৃষ্ণের অপ্রাকৃত লীলাকে কেন্দ্র করেই জন্মাষ্টমী উৎসব পালিত হয়। দেশের হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে জন্মাষ্টমী পালন করে থাকেন। দিবসটি উপলক্ষে আজ সিরাজগঞ্জের বেলকুচির বিভিন্ন মন্দিরে নানান ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
সকালে বেলকুচি কেন্দ্রীয় মহাশ্মশান সম্মুখ থেকে দেশ ও জাতীর মঙ্গলকামনায় এক মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হবে। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে দেলুয়া শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে।
এছাড়া বিভিন্ন মন্দিরে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে গীতা পাঠ,চিত্রাংকন,সাধারণ জ্ঞান এবং রচনা প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়েছে। সন্ধ্যায় ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জীবনী নিয়ে আলোচনা সভা ও কীর্তন এবং সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ বেলকুচি শাখার সভাপতি জয় শংকর সাহা, সাধারণ সম্পাদক রনি মিত্র এবং বাংলাদেশ পূর্জা উদযাপন পরিষদ বেলকুচি শাখার সভাপতি বৈদ্যনাথ রায় ও সাধারন সম্পাদক অমৃত নারায়ন দে সবাই কে শুভেচ্ছা জানিয়েছে।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বছর আগে দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণ স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। অত্যাচারী ও দুর্জনের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় সাধুজনের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কংসের কারাগারে জন্ম নেন তিনি। শিষ্টের পালন ও দুষ্টের দমনে তিনি ব্রতী ছিলেন। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাই ভগবানের আসনে অধিষ্ঠিত শ্রীকৃষ্ণ। হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। উৎসবটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে প্রতি বছর মধ্য-আগস্ট থেকে মধ্য-সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো এক সময়ে পড়ে।
শাস্ত্রীয় বিবরণ ও জ্যোতিষ গণনার ভিত্তিতে লোকবিশ্বাস অনুযায়ী কৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল মথুরা নগরীতে অত্যাচারী রাজা কংসের কারাগারে। তিনি বসুদেব ও দেবকীর অষ্টম পুত্র। তার পিতামাতা উভয়ের যাদববংশীয়। দেবকীর দাদা কংস, তাদের পিতা উগ্রসেনকে বন্দী করে সিংহাসনে আরোহণ করেন। একটি দৈববাণীর মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন যে দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তানের হাতে তার মৃত্যু হবে। এই কথা শুনে তিনি দেবকী ও বসুদেবকে কারারুদ্ধ করেন এবং তাদের প্রথম ছয় পুত্রকে হত্যা করেন। দেবকী তার সপ্তম গর্ভ রোহিণীকে প্রদান করলে, বলরামের জন্ম হয়। এরপরই কৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। কৃষ্ণের জীবন বিপন্ন জেনে জন্মরাত্রেই দৈবসহায়তায় কারাগার থেকে নিষ্ক্রান্ত হয়ে বসুদেব তাকে গোকুলে তার পালক মাতাপিতা যশোদা ও নন্দের কাছে রেখে আসেন। কৃষ্ণ ছাড়া বসুদেবের আরও দুই সন্তানের প্রাণরক্ষা হয়েছিল। প্রথমজন বলরাম (যিনি বসুদেবের প্রথমা স্ত্রী রোহিণীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন) এবং সুভদ্রা (বসুদেব ও রোহিণীর কন্যা, যিনি বলরাম ও কৃষ্ণের অনেক পরে জন্মগ্রহণ করেন)।