অবৈধভাবে আমদানি করা বা নকল ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন (আইএমইআই) নম্বরের মোবাইল হ্যান্ডসেটগুলো আগামী এপ্রিল মাসের পর আর ব্যবহার করা যাবে না। শুধুমাত্র বৈধভাবে আমদানি করা এবং দেশে বৈধভাবে উৎপাদিত সেট দিয়েই সিম চালু করা যাবে। এমনকি গত এক বছরে কেউ যদি অবৈধ হ্যান্ডসেট কিনে থাকেন তাহলে সেটিও বন্ধ হয়ে যাবে।
নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসির ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রারে (এনইআইআর) নিবন্ধিত সিম চালু হবে। বৈধ সেটগুলো বাজারে আসার আগেই এনইআইআরে নিবন্ধিত হবে। কোনো গ্রাহক মোবাইল সেট কিনতে গেলে সেটটির আইএমইআই নম্বর ফ্রি এসএমএসের মাধ্যমে নির্দিষ্ট নম্বরে পাঠিয়ে জানতে পারবেন সেটি বৈধ না অবৈধ।
অবৈধ হ্যান্ডসেট বন্ধ করতে প্রযুক্তিগত সমাধানের জন্য ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে যন্ত্রপাতি কিনছে বিটিআরসি। গত বৃহস্পতিবার যন্ত্রপাতির অর্ডারও দেওয়া হয়েছে। কাজ পেয়েছে সিনেসিস আইটি লিমিটেড। আগামী ২ ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে তাদের চুক্তি করতে হবে। চুক্তির ১২০ দিনের মধ্যে পুরো ব্যবস্থাটি চালু করতে হবে। এতে তাদের কাজের সর্বশেষ সময় দাঁড়ায় এপ্রিল মাস। এর মধ্যেই তাদের প্রযুক্তিটি চালু করতে হবে।
বিটিআরসির উপপরিচালক জাকির হোসেন খান গণমাধ্যমকে বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যেই অবৈধ হ্যান্ডসেট বন্ধের কার্যক্রম চালুর লক্ষ্য নিয়ে তারা কাজ করছেন। যন্ত্রপাতি এসে গেলে আর কোনো অবৈধ হ্যান্ডসেট বাজারে থাকবে না। কেউ কিনলেও চালু করতে পারবেন না।
এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে টেলিকম ওয়াচডাগ এই সংক্রান্ত একটি পাবলিক নোটিশ জারি করেছিল। তখন গ্রাহকদের মোবাইল ডিভাইসের আইএমইআই নম্বর বিটিআরসির সঙ্গে নিবন্ধিত কিনা তা পরীক্ষা করতে বলা হয়।
বিটিআরসির মতে, গত তিন বছরে ফোন আমদানিকারক, অপারেটর এবং বাংলাদেশি মোবাইল নির্মাতাদের তথ্য নিয়ে ১১৮.২২ মিলিয়ন আইএমইআই নম্বর একটি ডাটাবেজে যুক্ত করা হয়েছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, কোনো আইএমইআই যদি অনিবন্ধিত থাকে, তাহলে সেটি নকল এবং তা অবৈধভাবে দেশে আনা হয়েছে।
যে কেউ *#০৬#-এ ডায়াল করে মোবাইলের পর্দায় তার হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর খুঁজে পাবেন। সেটি নিবন্ধিত কিনা জানতে মোবাইল ফোনের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে KYD স্পেস ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর লিখে ১৬০০২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
গত বছরের ২২ জানুয়ারি বিটিআরসি মোবাইল হ্যান্ডসেট অনলাইন ডাটাবেস চালু করে। তারপরে থেকে বৈধভাবে আমদানি করা এবং এসেম্বল করা সব হ্যান্ডসেট তাদের ডাটাবেসে নিবন্ধিত হচ্ছে।
বিটিআরসির কর্মকর্তাদের মতে, বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যবহৃত ১০ কোটি মোবাইলের প্রায় ৩০ শতাংশ অবৈধভাবে আমদানি করা হয়েছে।