মোকছেদ আল মামুন (স্টাফ রিপোর্টার) গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ফরহাদ হোসেনের অফিসে বসে প্রকাশ্যে ধূমপানের দৃশ্য দেখা গেছে।
সেবা নিতে আসা নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় লোকজনের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে সচিবের প্রকাশ্যে ধূমপানের চিত্র গণমাধ্যমকর্মীদের ক্যামেরায় ধরা পরে।
এসময় দেখা যায়, ইউপি সচিব চেয়ারে বসে ঠোটে সিগারেট নিয়ে দিয়াশলাই দিয়ে সিগারেট লাগানোর চেষ্টা করছেন। পাশেই আবার ইউপি সদস্যের হাতে জ্বলন্ত সিগারেট দেখা যায়।
আরো পড়ুনঃ মিথ্যা মামলার স্তুপে কোণঠাসা হচ্ছে সুন্দরগঞ্জের হাফিজার রহমান!
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, তিনি শুধু অফিস কক্ষেই নয় পরিষদে সেবা নিতে আসা লোকজনের সামনেও প্রকাশ্যে ধূমপান করেন। ইউনিয়ন পরিষদ একটি পাবলিক প্লেস, সেখানে ধূমপান করা অন্যায়। এতে সেবা নিতে আসা জনসাধারণ বিব্রতবোধ করে দ্রুত পরিষদ ত্যাগ করে চলে যাওয়াকেই ভালো মনে করেন।ইউনিয়ন পরিষদের অফিস কক্ষে প্রকাশ্যে ধূমপানের কারণে আগত জণসাধারণের ক্ষতি হলেও কিছু যেন করার নেই!
এদিকে চিকিৎসকদের এক হিসাবে দেখা গেছে, প্রতিদিন ধূমপানের জন্য প্রায় ১৪ মিনিট করে আয়ু কমতে থাকে। তামাকের ভয়াবহতা হ্রাসে বাংলাদেশ সরকার ২০০৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে গৃহীত আন্তর্জাতিক চুক্তি এফসিটিসিতে (ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল) স্বাক্ষর করে।
চুক্তির বিধানসমূহ প্রতিপালনে সরকার পরবর্তী সময়ে ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করে। কিন্তু কিছু দুর্বলতার কারণে আইনটি ততটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। তাই ২০১৩ সালের মে মাসে আইনটি সংশোধিত আকারে পাস হয়। সর্বশেষ গত ১২ মার্চ পাস হয় সংশোধিত আইনের আলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০১৫। সংশোধিত আইন ২০১৩ ও বিধিমালা ২০১৫-তে নারী-শিশুসহ সব অধূমপায়ীকে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার থেকে রক্ষায় কঠোর বিধান রাখা হয়েছে।
এ লক্ষ্যে ‘পাবলিক প্লেস’ ও ‘পাবলিক পরিবহনে’ ধূমপান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অথচ সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ফরহাদ হোসেন দেশের এমন কঠোর আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে প্রত্যেকদিন পরিষদে বসেই ধূমপান করে আসছেন।সে যেন সরকারি কোন নীয়মনীতির তোয়াক্কাই করেনা।শুধু কি তাই তিনি পরিষদে থাকাকালীন তার পরিচিত বা আত্নীয়স্বজন কিংবা কোন জনপ্রতিনিধিরাও আসলে তাদেরকেও ধুমপানে উৎসাহিত করেন।যাকে বলা হয় চায়ের বদলে সিগারেট আপ্যায়ন।
পাবলিক প্লেসে ধুমাপনের বিষয়ে ইউপি সচিবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি সিগারেট খাওয়া নিয়ে কিছু বলতে পারবোনা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল- মারুফ বলেন, অফিসে বসে কেউ ধূমপান করতে পারেনা। এটি অবশ্যই দণ্ডনীয় অপরাধ। গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে আমি জানতে পারলাম। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান-কে জানানো হবে সেই সাথে আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।