লালমনিরহাটে প্রকাশ্য দিবালোকে বাড়িঘর ভাংচুর করে ও তাল্ডব চালিয়ে ৮ বছরের শিশু সারজিদা হত্যা চেষ্টার মামলা থেকে বাচঁতে নিজের গোয়ালঘরে আগুন দিয়ে পারে সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়েও শেষ রক্ষা হল না হামলাকারীদের।
অবশেষে হামলার ভিডিও চিত্র দেখে এবং প্রাথমিক তদন্ত শেষে মামলা গ্রহণ করে দুই হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। থানায় দায়ের হওয়া মামলা ও ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করে জানাযায়, জমিজমার বিরোধকে কেন্দ্র করে গেল ৯ ডিসেম্বর সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের হিরামানিক গ্রামের মৃত নেছার উদ্দিনের ছেলে মোক্তার হোসেন সরকারের বাড়িতে প্রকাশ্য দিবালোকে সংঘবদ্ধ হামলাকারীরা হামলা চালায়। ওই হামলার নেতৃত্ব দেন একই এলাকার মৃত- আব্দুল খালেকের ছেলে মহসিন আলী। হামলার সময় বাড়ির দরজা জানালা বন্ধ করে খাটের নিচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় মোক্তার হোসেনসহ তার পরিবারের সকল সদস্যরা। একপর্যায়ে গোপনে জানালা দিয়ে হামলার ভিডিও ধারণ করেন মোক্তার হোসেনের ছেলে। ওই ভিডিওতে দেখা যায় হামলাকারীরা লোহার রড, রামদা, বেকী, রেল লাইনের পাথর দিয়ে জানালার থাই, গ্রিল ও বাড়ির ভিতরের আসবাব পত্র ভাংচুর করছে। একপর্যায়ে বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকা ৮ বছরের শিশু কন্যা সারজিদার মাথায় লাগে হামলাকারীওদের কোপ।
এত ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে শিশুটি। পরবর্তীতে পুলিশের সহযোগিতায় শিশু সারজিদাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ২৪ ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরে আসে শিশুটির। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারনে দিতে হয় ৩ ব্যাগ রক্ত। এদিকে নক্কারজনক এই হামলার পর মামলা থেকে রেহাই পেতে হামলাকারীরা নিজেদের গোয়ালঘরে আগুন লাগিয়ে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করলেও স্থানীয়রা ও পুলিশের তৎপরতায় দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। পরবর্তীতে ওই দিনই মোক্তার হোসেন সরকার মহসীন আলী ও নজরুল ইসলামসহ মোট ১৪ জনের নাম উল্ল্যেখ করে আরো ৩০/৩৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। একই ঘটনায় কাউন্টার মামলা হিসেবে বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও গৃহবধুর শ্লীতাহানির অভিযোগ তুলে পাল্টা অভিযোগ দেন আসামী নজরুল ইসলাম। এরপর হামলার ভিডিও দেখে ও প্রাথমিক তদন্ত শেষে মোক্তার হোসেন সরকারের মামলাটি শনিবার রেকর্ড করে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতাকৃতরা হচ্ছেন নিজের ঘরে আগুন দেওয়া সদর উপজেলার হারাটি হিরামানিক এলাকা থেকে নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগী আশরাফ আলী। এবিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী মোক্তার হোসেন সরকার বলেন,‘ প্রকাশ্য দিবালোকে সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় হামলাকারীরা। এসময় আমার ৮ বছরের নাতনিকেও হত্যার চেষ্টা করা হয়। আমি ন্যায় বিচার চাই, হামলাকারীদের শাস্তি চাই।’
সদর থানার ওসি শাহা আলম বলেন,‘ ইতোমধ্যেই মামলা হয়েছে এবং দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।