তাহমিনা আক্তার,ঢাকা:: চলমান শৈত্যপ্রবাহে সারা দেশে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো শীতে কাঁপছে।
এতে কাবু পড়েছে বয়স্ক মানুষ এবং শিশুরা। স্কুল-মাদরাসামুখী শিশু-কিশোররা শীতের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত নয় বলে মনে করেন অভিভাবকরা। শিক্ষক-অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শীতে অন্তত সাতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি উঠেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শীতের মধ্যে শিক্ষার্থীরা স্কুল যেতে সমস্যায় পড়ছে। গ্রামাঞ্চলে এ সমস্যা আরও বেশি। কারণ ঢাকার তুলনায় গ্রামে শীতের প্রকোপ বেশি।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, জানুয়ারিজুড়েই শৈত্যপ্রবাহ চলবে। এ সময় তাপমাত্রা উঠানামা করবে। আর আগামী কয়েকদিনে শীতের প্রকোপ আরও বাড়বে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর, মৌলভীবাজারের ওপর দিয়ে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে। ফলে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
বছরের শুরুতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বই বিতরণ, ভর্তি কার্যক্রম চলছে। নিয়মিত ক্লাসও হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কম। আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উপস্থিতির হার আরও কমেছে।
পুরান ঢাকার একটি স্কুলের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে বলেন, এই সময়ে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেক কম। শতের কারণে যারা আসছে তাদেরও কষ্ট হচ্ছে।
তীব্র শীতের কারণে দেশের কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে। যদিও সেসব জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু বলেন, দেশে তীব্র শৈতপ্রবাহ বহমান। এহেন অবস্থায় সারা দেশের অভিভাবকদের পক্ষে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আগামী সাতদিনের জন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।
১৬ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এক নির্দেশনায় তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে স্কুল-কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত দেয়। পরে তা সংশোধন করে ১০ ডিগ্রি করা হয়। ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, পঞ্চগড়সহ কয়েকটি জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু নির্দেশনা থাকলেও কোথাও বন্ধ করা হচ্ছে আবার কোথাও বন্ধ করা হচ্ছে না।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি দুলু বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্তহীনতা ও সমন্বয়হীনতায় ভুগছে। এতে বাচ্চাদের ক্ষতি হচ্ছে। সেই কারণে সাময়িকভাবে সাত দিনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত।