রাশেদুল ইসলাম রাশেদ।। সব সময় ক্যাম্পাসে থাকার শর্তে নিয়োগ পেয়েছেন রংপুরে অবস্থিত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। কিন্তু উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দায়িত্ব পালন করছেন ক্যাম্পাসে গরহাজির থেকেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ‘অধিকার সুরক্ষা পরিষদ’–এর নেতাদের সর্বশেষ দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ পযর্ন্ত ১ হাজার ৩৫২ দিনের মধ্যে উপাচার্য ক্যাম্পাসে এসেছেন মাত্র ২৩৭ দিন। ১ হাজার ১১৫ দিনই গরহাজির ছিলেন। উপাচার্যের ক্যাম্পাসে উপস্থিতির দাবিতে শিক্ষক-কর্মকর্তারা তিন বছর ধরে আন্দোলন করে আসছেন, কাজ হয়নি।
সর্বশেষ শনিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর দুর্নীতির ৭৯০ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্র প্রকাশ করেন। এতে আট ধরনের অভিযোগ তুলে উল্লেখ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ক্যাম্পাসে অনুপস্থিতির বিষয়টিও।
৭নং অভিযোগে বলা হয়, তার উপস্থিত মাত্র ২৩৭ দিন তা আবার এক বা দুই ঘন্টার জন্য! ড. কলিমউল্লাহ’র উপস্থিতি-অনুপস্থিতির হিসাব করে অধিকার সুরক্ষা পরিষদ দেখেছে যে, ১৪ জুন ২০১৭ উপাচার্য হিসেবে যোগদানের পর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ পযর্ন্ত মোট ১৩৫২ দিনের মধ্যে ১১১৫ দিনই তিনি ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থেকেছেন। অর্থাৎ উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২৩৭ দিন। কখনোই তিনি পূর্ণদিন উপস্থিত থাকেন না, কখনো ক্যাম্পাসে থাকেন এক ঘন্টা বা দুই ঘন্টা।
অধিকার সুরক্ষা পরিষদ বলছে, “মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ১লা জুন ২০১৭ ইস্যুকৃত তাঁর নিয়োগ প্রজ্ঞাপনের ৪ নং শর্তে বলা হয়েছে: “তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন।” কিন্তু প্রজ্ঞাপনের ওই নিয়োগ শর্ত অমান্য করে উপাচার্য ড. কলিমউল্লাহ ধারাবাহিকভাবে অনুপস্থিত থাকছেন। তিনি মিথ্যাচাার করেন এই বলে যে তাকে ঢাকায় থাকার জন্য “প্রধানমন্ত্রীর শ্রুতি নির্দেশনা” আছে। প্রায়শঃই বলেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তিনি সকল কাজ করেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তিনি রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচার লঙ্ঘন করেছেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী কখনোই এমন নির্দেশনা দিবেন না। রেজিস্ট্রার, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক, আইন কর্মকর্তাসহ উপাচার্যের আশীর্বাদপুষ্ট অনেক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারি নিয়মিতভাবেই ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত।”
জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৪ জুন রাষ্ট্রপতি ও আচার্য যে তিন শর্তে উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহকে নিয়োগ দিয়েছিলেন, তার একটি হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে তাকে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকতে হবে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপাচার্যের বাসভবন করে দিয়েছে সরকার।