ঢাকাশুক্রবার , ২২ জানুয়ারি ২০২১
  1. ! Без рубрики
  2. 1-2
  3. 10205_wa
  4. 10500_wa4
  5. 10510_wa
  6. 10600_wa
  7. 1Win Brasil
  8. 1win Brazil
  9. 1win India
  10. 1WIN Official In Russia
  11. 1win Turkiye
  12. 1win uzbekistan
  13. 1winRussia
  14. 1xbet Russian
  15. ai chat bot python 10

মাুচকি হাসিতে সদকার সওয়াব!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
জানুয়ারি ২২, ২০২১ ৬:৪১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

তমালিকা আক্তার।। হাসি মানুষের সৌন্দর্য, হাসি মানুষের আধুনিকতা। হাসি কখনো ভুলিয়ে দেয় রাজ্যের দুঃখ-ব্যথা ও বিষাদের যন্ত্রণা। হাস্যোজ্জ্বল মানুষকে সবাই ভালোবাসে। আপন ও কাছের ভাবে। হাসির মাধ্যমে হৃদ্যতা ও বন্ধুত্ব তৈরি হয়। একটুখানি ‘হাসির ঝিলিক’ দুজনের সম্পর্কে নতুনমাত্রা যোগ করতে পারে।

কেউ যদি গোমড়ামুখো হয়ে থাকে, তাহলে পরস্পর দূরত্ব ও ব্যবধান তৈরি হয়। তাই পরিচিত-অপরিচিত সবার সঙ্গে সবসময় হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা উত্তম। সিগমুন্ড ফ্রয়েড বলেছেন, ‘হাসি আমাদের মনের উদ্বেগ দূর করে। রাগ আর দুঃখ দূর করে; তাই হাসির গুরুত্ব অনেক।’

হাসির উপকারিতা

প্রকারভেদে হাসির বহুমাত্রিক উপকারিতা রয়েছে। যেমনÑ হাসি মানসিক চাপ দূর করে। ব্যথা-জ¦ালা কমায়, রাগ নিয়ন্ত্রণে আনে। রোগ প্রতিরোধ করে, অকালে বৃদ্ধ হতে দেয় না। চিন্তাভাবনাকে সতেজ ও শাণিত করে। সম্পর্কের বিকাশ ও উন্নতি করে। আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে ইতিবাচক ভাবতে শেখায়। মনে-প্রাণে নতুন শক্তির জোগান দেয়। কাজের মান ও আয়ু বাড়ায়; নরওয়েতে এক গবেষণায় দেখা গেছে, হাসি মানুষকে দীর্ঘায়ু করে!

হাসির আদবকেতা ও অন্যান্য

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিটি শিশু দিনে প্রায় ১০০ বার হাসে। আর পূর্ণবয়স্ক মানুষ দৈনিক কমপক্ষে ১০ বার হাসেন। হাসি দেহ-মনের জন্য উপকারী ও জরুরি অবশ্যই; তবে হাসির কিছু আদবকেতা রয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে হাসতে পারা বুদ্ধিমানের কাজ। যদ্দুর সম্ভব ক্রূর ও বক্র হাসি থেকে দূরে থাকা গুরুত্বপূর্ণ। কারও বিপদ দেখে কখনো হাসতে নেই। কবি বলেছেন, ‘এত বুড়ো কোনোকালে হব নাকো আমি, হাসি-তামাশারে যবে কব ছ্যাব্লামি।’

হাসিমুখে কথা বলা ইসলামের সৌন্দর্য

চলার পথে, কাজে-কর্মে বহু মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। একজন মুসলিম হিসেবে অন্য ভাইয়ের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ কেমন হওয়া উচিত, তা মহানবী (সা.) শিখিয়ে গেছেন। পাশাপাশি অন্যের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এটিকে তিনি সদকা হিসেবেও ঘোষণা করেছেন। (সদকা অর্থ দান; যার বিনিময়ে আল্লাহ আখেরাতে পুরস্কৃত করবেন)

এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রতিটি ভালো কাজ সদকা। আর গুরুত্বপূর্ণ একটি ভালো কাজ হলো, অন্য ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৭০)

অন্য হাদিসে প্রিয়নবী (সা.) বলেন, ‘তোমার ভাইয়ের সাক্ষাতে মুচকি হাসি নিয়ে আসাও একটি সদকা।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৫৬)

হাসিমুখে সাক্ষাৎ করলে যে কেউ খুশি হয়। মুখ মেঘাচ্ছন্ন করে রাখলে, মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তাই সাক্ষাতে হাসিমুখে কথা বলা ও আনন্দ দেওয়ার বিষয়টি আল্লাহতাআলা বেশ পছন্দ করেন।

হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের কোনো মুসলিম ভাইকে খুশি করার জন্য এমনভাবে সাক্ষাৎ করে, যেমনটি সে নিজের জন্য পছন্দ করে। কেয়ামতের দিন (বিনিময়ে) আল্লাহতাআলা তাকে খুশি করবেন।’ (তাবারানি, হাদিস : ১১৭৮; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, হাদিস : ১৩৭২১)

প্রিয়নবী (সা.) সবসময় মুচকি হাসতেন। মুচকি হাসি ছিল তার চিরাচরিত ভূষণ। প্রতিটি হাদিস গ্রন্থে তার হাসির ব্যাপারে বিভিন্ন আলোচনা এসেছে।

মাত্রাতিরিক্ত হাসি ইসলামে নিষেধ

হাসি মানুষের আবেগ-উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ। ভালো লাগা ও আনন্দ বা কোনো অর্জনের পরবর্তী আবেগের স্ফুটন। কিন্তু অতিরিক্ত হাসি হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ এতে বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা তৈরি হতে পারে।

অতিরিক্ত হাসি অনেক সময় হৃদয়কে পাষ- করে তোলে। মনোকুঞ্জ রুক্ষ করে দেয়। ফলে এতে মানুষ বিভিন্ন অপরাধে জড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হয়। গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক কাজ রেখে শঠতা ও নির্লিপ্ততায় আক্রান্ত হয়। তাই ইসলাম মাত্রাতিরিক্ত হাসি নিষেধ করেছে।

আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘মাত্রাতিরিক্ত হেসো না, কারণ অতি হাসি আত্মাকে মৃত বানিয়ে দেয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩০৫)

মনীষীরা বলেছেন, আত্মার মৃত্যু হলো সামগ্রিক দুষ্টের সূত্র। এজন্য মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘সাবধান! অতিরিক্ত হাসি থেকে বেঁচে থাকো। কেননা অধিক হাসি আত্মা নষ্টের কারণ।’ (সহিহুল জামে, হাদিস : ৭৮৩৩) অন্য এক হাদিসে প্রিয়নবী (সা.) বলেন, ‘আমি যা জানি, তা যদি তোমরা জানতে, তাহলে কম হেসে বেশি কাঁদতে…।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩১২)

লোক হাসাতে মিথ্যা বলা

অনেকে মিথ্যা বলে মানুষকে আনন্দ দেন। শ্রোতার কাছে প্রিয় হতে কিংবা মনোযোগ আকর্ষণে মিথ্যার আশ্রয় নেন। এ ধরনের কাজকে হাদিসে নিন্দা করা হয়েছে। রাসুল (সা.) হাদিসে বলেছেন, ‘ধ্বংস ওই ব্যক্তির জন্য, যে কথা বলার সময় মিথ্যা বলে মানুষ হাসায়। তার জন্য ধ্বংস, তার জন্য ধ্বংস।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৯০)

তাচ্ছিল্যের হাসি নিষিদ্ধ

অবস্থাভেদে প্রয়োজনীয় কথাবার্তার ধরন, প্রকার ও বিন্যাস বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কিন্তু তাই বলে কাউকে কখনো তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য নয়। কাউকে হেয়জ্ঞান করা সভ্যসমাজ বিবর্জিত অভ্যাস। তাচ্ছিল্য করা যেমন ইসলামে নিষিদ্ধ; তেমনি তাচ্ছিল্যের হাসিরও অনুমোদন নেই ইসলামে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতাআলা বলেন, ‘তোমরা কি এই বিষয়ে আশ্চর্যবোধ করছ? এবং না কেঁদে হাসছ? তোমরা কৌতুক-উচ্ছ্বাস করছ!’ (সুরা নাজম, আয়াত : ৫৯-৬১) প্রিয়নবী (সা.) হাদিসে বলেছেন, ‘ব্যক্তির মন্দের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে তার ভাইকে তাচ্ছিল্য করে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৪)

মোটকথা, হাসি একটি সাধারণ ও অতি স্বাভাবিক বিষয়। অথচ এটির বিনিময়ে আমলে আল্লাহতাআলা বড় পুরস্কার দেবেন। হাসিমুখে কথা বললে মানুষ যেমন খুশি হয়; আল্লাহতাআলা খুশি হন। এর বিনিময়ে কেয়ামতের দিন তিনি বান্দাকে আনন্দিত ও খুশি করবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন