আশরাফুল হক, লালমনিরহাট।। লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলীর দফতরে ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না বলে ঠিকাদারদের অভিযোগ। বিলের স্মারক নম্বর দিতেও ৫শত টাকা ঘুষ গুনতে হয়। অভিযোগে জানা গেছে, গ্রামীন হাট-বাজার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যায়ে উপজেলার সাপ্টিবাড়ি হাটের ৪তলার ভিতের উপর ২তলা নির্মাণ কাজের দরপত্র আহবান করে প্রকৌশল দফতর।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি হিসেবে কাজটি তদারকি করছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক রফিকুল আলম। প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যায়ে সেই নির্মান কাজটি প্রায় ৫০ শতাংশ সম্পর্ন হলে তৃতীয় দফায় বিলের আবেদন করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সেই বিলের কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর দফতরে যান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক রফিকুল আলমের ভাতিজা উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক কৃষিবিদ হযরত আলী। এ সময় বিলের আবেদনে স্মারক নম্বর দেয়ার জন্য ফাইলটি অফিস সহকারী নুরজাহান বেগম জেবির কাছে পাঠানো হয়। তিনি টাকা ছাড়া স্মরক নম্বর দিবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
অবশেষে বাধ্য হয়ে প্রথমে দুইশত টাকা প্রদান করে স্মরক নম্বর বসানোর অনুরোধ করেন। ঘুষ কম হওয়ায় টাকা ছুড়ে ফেলে দেন অফিস সহকারী নুরজাহান বেগম জেবি। শেষ পর্যন্ত ৫শত টাকা ঘুষ নিয়ে তবেই বিলে স্মরক নম্বর বসিয়ে ফাইলটি অগ্রগামি করেন অফিস সহকারী।ঠিকাদারের প্রতিনিধি কৃষিবিদ হযরত আলী বলেন, স্মারক নম্বর বসাতে গেলে অফিস সহকারী জেবি মিষ্টি খাওয়ার আবদার করেন। তাই তাকে প্রথমে দুইশত টাকা দিয়েছিলাম। কম হওয়ায় সেই টাকা আমার পায়ে ছুড়ে মারেন এবং আমাকে ভৎসনা করেন। অফিসারদের লাখ লাখ টাকা ঘুষ দেন আর আমাদের বেলায় ৫শ/হাজার টাকা বের হয় না। যান স্মারক নম্বর অফিসারের কাছে নেন বলে জেবি ফাইলটি ফেরৎ দেন। অবশেষে ৫শত টাকা ঘুষ নিয়ে তবেই স্মারক নম্বর বসিয়ে ফাইলটি অগ্রগামী করেন অফিস সহকারী নুরজাহান জেবি। এদের কাছে ঠিকাদাররা জিম্মী বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ঘুষ গ্রহনকারী উপজেলা প্রকৌশলীর অফিস সহকারী নুরজাহান বেগম জেবি বলেন, ঘুষ নয়, বিল তুলছেন তাই মিষ্টি খাওয়ার জন্য টাকা দিয়েছেন। তবে ঘুষ গ্রহনের ছবিটি তার বলে সনাক্ত করলেও নিউজ প্রকাশ না করতে এ প্রতিবেদককে অনৈতিক সুবিধার প্রস্তাব দেন তিনি।
আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা ঘুষ গ্রহনের ছবিটি তার অফিসের এবং অফিস সহকারী নুরজাহান বেগম জেবির বলে সনাক্ত করে বলেন, ফাইল ছুড়ে ফেলে টাকা আদায় করাটা দুঃখজনক। তাকে সতর্ক করা হবে। তিনিও নিউজ প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন।
লালমনিরহাট স্থানীয় প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আলী খান বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে জনগনের সেবা করার জন্যই সরকার বেতন দেন। এরপরও ফাইল আটকিয়ে মিষ্টি খাওয়ার জন্য টাকা নেয়া অন্যায়। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।