প্রতিদিনের বাংলাদেশ | বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট ঠেকাতে আটটি নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পাশাপাশি কয়েকটি করোনা পরীক্ষার ল্যাবের মাধ্যমে বিদেশগামী যাত্রীদের ভুয়া করোনা রিপোর্ট সরবরাহ করা হচ্ছে- এমন অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে চারটি ল্যাবের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ল্যাবগুলোতে সিদ্ধান্ত জানিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এসব কারণে নিজ বিল্ডিংয়ের (ল্যাবের) বাইরে করোনার নমুনা সংগ্রহ করা ও বাড়িতে গিয়ে বিদেশগামী যাত্রীদের নমুনা সংগ্রহ বন্ধ রাখার নির্দেশনাও দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহের অভিযোগে সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার, স্টিমজ হেলথ কেয়ার, আল জামী ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেডের মিরপুর শাখাকে করোনা পরীক্ষা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের নমুনা সংগ্রহ ও করোনার সনদ দেওয়ার কার্যক্রমও স্থগিত করেছে এই প্রতিষ্ঠান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং দেশের ভাবমূর্তি ভয়ংকরভাবে ক্ষুণ্ণ করেছে। একই সঙ্গে করোনা আরটি-পিসিআর পরীক্ষার অনুমোদন পাওয়া দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবগুলোকে আটটি নির্দেশনা মানতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এসব নির্দেশনা অমান্য করলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হচ্ছে- পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিদেশগামী যাত্রীদের কভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহের জন্য ল্যাবগুলোর নিজস্ব ভবনের বাইরে স্থাপিত সব ধরনের নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তাদের নমুনা বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা যাবে না। বিদেশগামীদের নমুনা সংগ্রহের সময় মূল পাসপোর্ট যাচাই ও পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করে নমুনা সংগ্রহ ফরম পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে পাসপোর্টের ফটোকপি গ্রহণযোগ্য হবে না। বিমানবন্দরে বিদেশগামীদের কভিড-১৯ পরীক্ষা সনদ, পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে যাচাই করা হবে। টেলিফোন বা মোবাইল নম্বর প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে না। সাত দিনের মধ্যে কোনো পজিটিভ রিপোর্ট থাকলে ওই যাত্রীকে দেশত্যাগের অনুমতি দেওয়া যাবে না।
কোনো বিদেশগামী যাত্রী কভিড-১৯ পজিটিভ হলে, তিনি কমপক্ষে সাত দিন পর শুধু সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ল্যাবে পুনরায় পরীক্ষা করাবেন এবং পরবর্তী সময় যদি নেগেটিভ সনদপ্রাপ্ত হন সেক্ষেত্রে দেশত্যাগ করতে পারবেন। কোনো আরটি-পিসিআর ল্যাবের ব্যাপারে কোনো ধরনের অভিযোগ উত্থাপিত হলে ল্যাবটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করে তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী অনুমোদনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। কোনো বিদেশগামী যাত্রীর কভিড-১৯ পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি দুই জায়গাতেই প্রথমে পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে যাচাই করে দেখতে হবে যে, তিনি গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অন্য কোথাও আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করেছেন কিনা। করে থাকলে এবং পজিটিভ হলে তাকে সাত দিন ফের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করার সুযোগ দেওয়া যাবে না।