কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি | কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাচিরচরে জাহিদ হাসান (১৮) নামে এক প্রতিবন্ধী যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের মেম্বার মা ছলিমা বেগমকে বাঁচাতে গিয়ে বুধবার সকালে এ হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি।
মা হাসপাতালের বেডে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন আর ছেলের লাশ পড়ে আছে হিমঘরে। এ এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘাতক কাজল খান কাশেমকে আটক করেছে। এলাকায় বিরাজ করছে থমথমে অবস্থা।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, কুড়িগ্রাম সার্কেল অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উৎপল কুমার রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্ত করে স্বজনদের হাতে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক সরকার জানান, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম নিয়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভর্তি হয় প্রতিবন্ধী জাহিদ হাসান (১৮)। জাহিদের মাথায় বড় একটি টিউমার রয়েছে। টিউমারের ওপরও আঘাত করা হয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি হন তার মা ইউপি সদস্য ছলিমা বেগম (৪৮)। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ১১টার দিকে জাহিদের মৃত্যু হয়। তার লাশ হিমঘরে রয়েছে। আর মা ছলিমা বেগম মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তিনি আশঙ্কা মুক্ত।
ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মেম্বার ছলিমা বেগম জানান, বুধবার সকালে তার বাড়িতে ভিজিএফের চাল পেতে বিভিন্ন এলাকার নারীরা আসেন। অভিযুক্ত ঘাতক কাজল খান কাশেম আর তার বাড়ি মুখোমুখি। দুই বাড়ির মাঝখানে রাস্তা। লোকজনের কোলাহলে তার ঘুম ভেঙে যায়।
সকাল সাড়ে ৭টায় এই অজুহাতে বাড়ি থেকে কাঠ এনে আমাকে রাস্তার ওপর পেটাতে থাকে। আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে প্রতিবন্ধী ছেলে জাহিদ হাসান আমাকে জড়িয়ে ধরে বাঁচানোর চেষ্টা করে। এ সময় কাশেম জাহিদকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে।
তিনি জানান, ঘটনাস্থলে জাহিদ লুটিয়ে পড়ে। কান দিয়ে রক্ত বের হয়। সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। আমারও মাথা ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। পরে প্রতিবেশীরা আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করেন। এসব কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি আরও জানান, আগে থেকেই কাশেমের সঙ্গে রাস্তা নিয়ে তার বিরোধ ছিল। এই বিরোধকে কাজে লাগিয়ে আমার অসুস্থ ছেলেটাকে পিটিয়ে হত্যা করল। আমি এর বিচার চাই।